পানিসাগর গণধর্ষণ কান্ডের অভিযুক্ত দের জামিনের বিরুদ্ধে জনজাতিদের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল - Sabuj Tripura News


Massive protest procession of tribes against the bail of the accused in the Panisagar gangrape case.

সবুজ ত্রিপুরা 
৫ জুলাই
সোমবার

ধর্মনগর প্রতিনিধি:- পানিসাগর গণধর্ষণ কান্ডের অভিযুক্তদের মামলা চলাকালীন অন্তর্বর্তী সময়ে জামিনে মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে রেখে ট্রায়াল রানের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি প্রদানের দাবিতে উত্তরের পানিসাগরে জনজাতিদের বিক্ষোভ মিছিল ও সভা হয়। 

প্রসঙ্গত চলতি বছরের ২৮ মে উওর জেলার পানিসাগরের এডিসি অধ্যুষিত চন্দ্র হালাম পাড়ার নাবালিকা কন্যার গণধর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে নাবালিকা কন্যার পরিবারের পক্ষ থেকে পানিসাগর থানায় অভিযুক্ত রাজেশ রুদ্রপাল, শুভজিৎ সেন এবং সঞ্জয় দাসের বিরুদ্ধে এফ আই আর দাখিল করা হয়েছিল। 

যে দিন মামলা করা হয় ঐ দিন রাতেই ধর্ষিতা নাবালিকা পরিবারের অভিযোগ মূলে অভিযুক্ত শুভজিৎ এবং সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে পানিসাগর থানার পুলিশ। 

এদিকে পুলিশি হানার আচ পেয়ে ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রাজেশ রুদ্রপাল গা ডাকা দিলেও প্রায় তিন দিন পর অভিযুক্ত রাজেশ রুদ্রপাল কে চুড়াইবাড়ি রেলষ্টেশন থেকে চুড়াইবাড়ি থানা আটক করে পানিসাগর থানার হাতে তুলে দেয়। 

যদিও পানিসাগর আরক্ষা প্রশাসনের উদ্দ্যোগে অভিযুক্তদের পুলিশি রিমান্ডে এনে জোর তল্লাশি চালিয়ে ঘটনার বিষয় বৃতান্ত নিয়ে কৈলাশহর থেকে ফরেন্সিক টিম এনে পানিসাগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌভিক দে এই মামলার তদন্ত করে আদালতে সোপর্দ করে। 

কিন্তু এরি মধ্যে মামলা চলাকালীন অন্তর্বর্তী সময়ে আদালতের রায়ে অভিযুক্ত অপরাধীদের ১৮ জুন জামিন মঞ্জুর করে আদালত। ধর্ষিতা নাবালিকা হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে পোকসো চার ধারাও প্রয়োগ করেছিল পানিসাগর থানার পুলিশ।

একদিকে গণধর্ষণ অন্যদিকে পসকো সত্ত্বেও জামিন পাওয়ায় অ্যাডভোকেট সুদর্শন শর্মা লীগেল সেলের মাধ্যমে ১৯ জুন হাইকোর্টে আবেদন জানান। 

আইন বিভাগ সুদর্শন শর্মাকে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর বানিয়ে একই কোর্টে পুনরায় মামলা চালানোর জন্য অনুমতি দেয়। সুদর্শন বাবু ২৬ জুন পুনরায় মামলাটি জেলা দায়রা কোর্টে ফাইল করলে ৩০ জুন মামলাটি কোর্টে উঠলে অভিযুক্তদের জামিন বাতিল হয়ে যায়। 

আবারো পুলিশ অভিযুক্তদের ৩০ জুন রাতেই গ্রেফতার করে পুনরায় কারাগারে পাঠায়। তবে এমন একটি চরম অপরাধমূলক ঘটনায় জামিন মঞ্জুর হওয়ায় তা নিয়ে সন্ধেহ ঘনি ভুত হতে থাকে সাধারন জনগনের মধ্যে। 

এর ফলে শুক্রবার সকাল ১১ ঘটিকায় পানিসাগর বাজারে নাবালিকা ধর্ষিতা পরিবারের পক্ষথেকে ইয়ং চড়েই এসোসিয়েশন, রাংলং ইয়ুথ এসোসিয়েশন, ইয়ং ব্রু এসোসিয়েশন, হিমস্ কাঙ্গ নায়রা ক্লাব, ব্রুইনি নাই মিথো এদের যৌথ উদ্দ্যোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ র‍্যালি সংঘটিত করা হয়। 

এতে নেতৃত্ব দেন আর ওয়াই এ-এর পক্ষে রোবেন রাংলং, ওয়াই সি এ-এর পক্ষে কে ভার্না চরৈই, এবং তিপরা মথার এর পক্ষে জাই চুঙ থাং হালাম। 

শুক্রবার  সকাল থেকেই পানিসাগর পুরাতন নগর পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন এলাকায় দলে দলে বিক্ষুব্ধ জনজাতি অংশের জনগন জড়ো হতে থাকে। 

এর পর প্রায় পাঁচ শতাদিক বিক্ষোব্ধ জনজাতি অংশের মহিলা এবং পুরুষ মিলে একটি মৌন মিছিলের মাধ্যমে পানিসাগর বাজারের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে এস ডি এম অফিস সংলগ্ন বিবেকানন্দ মুক্ত মঞ্চে এসে মিলিত হয়। 

এর পরই বিভিন্ন সংঘটনের পক্ষ থেকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা পানিসাগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌভিক দে মহাশয়ের কাছে একটি ডেপুটেশন প্রদান করেন।

এদের প্রতিনিধিরা জানান মামলা চলাকালীন অন্তর্বর্তী সময়ে কিভাবে অভিযুক্ত তিন জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানান তারা। 

এদের দাবি অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে রেখে যেন ট্রায়াল রানের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি প্রদান করে মহামান্য আদালত। পানিসাগরের এসডিপিও সৌভিক দে তাদের জানান বর্তমানে তিন অভিযুক্ত ধর্মনগরের সাবজেলে রয়েছে। 

পুলিশ দ্রুত গতিতেই তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি প্রদান করবে আদালত। সূত্রের খবর ফরেনসিক বিভাগের রিপোর্ট ইতিমধ্যে পুলিশ সুপারের কাছে চলে এসেছে বলে জানা গেছে। 

দুই এক দিনের মধ্যেই পানিসাগর থানার পুলিশ এই ঘটনার চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেবে বলে জানা গেছে। এও যানা গেছে তদন্তের কাজ প্রায় শেষের পথে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu