জোরালো হচ্ছে ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের দাবি - Sabuj Tripura News

সবুজ ত্রিপুরা
২৩ নভেম্বর ২০২০  
সোমবার

ধর্মনগর প্রতিনিধিঃ ধর্মনগরের বেশকিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ,সংগঠক, শিক্ষক ,কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিক অর্থাৎ সব অংশের জনগণদের নিয়ে গঠিত ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন ডিমান্ড কমিটি নামক একটি সংস্থার উদ্যোগে বহু বছর যাবৎ একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি হয়ে চলেছে ধর্মনগরে।এই অরাজনৈতিক সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মনগরে রেলওয়ে ডিভিশন স্থাপন করা। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংগঠনের উদ্যোগে লাগাতার বছরের-পর-বছর কর্মসূচি চলছে। কখনো প্রধানমন্ত্রীর নিকট, কখনো রেলমন্ত্রী কখনো বা মুখ্যমন্ত্রীর নিকট ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের জন্য তারা ক্রমাগত দাবি করে চলেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় এই ডিমান্ড কমিটির উদ্যোগে ধর্মনগরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে জানানো হয়। বর্তমান শাসকদল ২০১৩ সালের বিধানসভার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করেছিলেন ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের দাবীটি। 


তারপর আবার ২০১৫ সালে পৌর নির্বাচনে বিভিন্ন জনসভায় বিজেপি ঘোষণা করেছিলেন ধর্মনগর রেল ডিভিশন স্থাপন হবে। এমন কি বিগত বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপির প্রভারী হয়ে আসা তথা বর্তমান বিজেপি সর্বভারতীয় সম্পাদক সুনিল দেওধর এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বিভিন্ন জনসভায় ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।কিন্তু বর্তমানে ধর্মনগরে ডিভিশন স্থাপনের বিষয়ে শাসকদল কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এমনকি তারা জানান ধর্মনগরের রেলওয়ে ডিভিশন স্থাপনের দাবি নিয়ে ডিভিশন ডিমান্ড কমিটি দেশের প্রধানমন্ত্রী রেলমন্ত্রী সহ বিজেপির জাতীয় সভাপতি, সম্পাদক প্রত্যেকের কাছে বারবার চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু তারা কোন সারা দেননি।  


এই কথাগুলো বলে ক্ষোব  ব্যক্ত করার সাথে সাথে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত এই ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন কমিটির নেতৃত্বেরা আবার এ কথাও স্বীকার করেন যে।বিগত দিনে বাম আমলে তারা বহুবার ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের দাবি তুলেছেন। বাম নেতারা কিন্তু তাতে খুব একটা সায় দেননি। অথচ বামেরাও দাবি করতেন ডিভিশনের। কিন্তু  তারা  ধর্মনগরের কথা বলতেননা। তবে একমাত্র বিজেপি সরকার বলেছিলেন ধর্মনগরে রেল ডিভিশন স্থাপনের কথা।তাই ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন ডিমান্ড কমিটির আশা বিজেপি দল তাদের কথা অবশ্যই পালন করবেন। তিনি আরো বলেন রেলওয়ে ডিভিশন স্থাপনের ক্ষেত্রে যে সকল প্রয়োজনীয় দিক দরকার। সবই ধর্মনগর রয়েছে। সে বিষয় গুলোও ইতিমধ্যে রেলওয়ে দপ্তরকে অবগত করা হয়েছে। যেমন ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন স্থাপনের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে রেলওয়ে দপ্তরের নিজস্ব জায়গা। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ধর্মনগর থেকে কৈলাশহর কমলপুর হয়ে আগরতলা এবং ধর্মনগর থেকে কাঞ্চনপুর হয়ে জম্পুই। দুটি পৃথক রেললাইনের  সার্ভের কাজ ইতিমধ্যে চলছে। অতএব এই দুইটি রেললাইন হয়ে গেলে ধর্মনগর  জংশন হয়ে যাবে।  অতএব ডিভিশন এর ক্ষেত্রে অতি গুরুত্ব পূর্ণ প্রয়োজনীয় জংশন রেল স্টেশন হয়ে উঠবে ধর্মনগর। পাশাপাশি ইতিমধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে আসামে তিনটি রেলওয়ে ডিভিশন রয়েছে এবং ভৌগলিক ভাবে বর্তমানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলোর সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেমন দক্ষিণ আসাম ,মনিপুর ,মিজোরাম ও ত্রিপুরার মধ্যবর্তীস্থানে ধর্মনগর রেল স্টেশনটি রয়েছে। 


তাই  এখান থেকে এই বিস্তীর্ণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির সাথে রেলওয়ে দপ্তরের কাজ সম্প্রসারণ এর ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।  তারা জানিয়েছেন রেল দপ্তর তাদের এই দাবি গুলো নামানলে আগামীতে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্মনগর রেল ডিভিশন স্থাপন করা।ধর্মনগর রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড এর অফিস স্থাপন করা। ধর্মনগর থেকে কৈলাশহর রেল সম্প্রসারণ এর কাজ শুরু করা। ধর্মনগর থেকে কাঞ্চনপুর হয়ে জম্পুই পর্যন্ত রেল সম্প্রসারণ এর উদ্যোগ গ্রহণ করা। এই দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন কমিটি আগামী ডিসেম্বর মাস ব্যাপী বিভিন্ন বাজার সভা ও পথ সভার আয়োজন করেছেন। এই সভা গুলোর মধ্যে ব্যাপক অংশের জনগণদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন তারা। শনিবারের এই সাংবাদিক সম্মেলনের নেতৃত্ব দেন ধর্মনগর রেলওয়ে ডিভিশন ডিমান্ড কমিটির সম্পাদক কংকজ কুমার দেব ছিলেন প্রবীণ সদস্য কন্দর্প ভট্টাচার্য, রণজয় দেব, রসিক রঞ্জন গোস্বামী প্রমুখ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu