ধর্মনগর প্রতিনিধিঃ সোমবার ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল বীর যোদ্ধা শহীদ ভগৎ সিং এর জন্মদিন। অথচ ধর্মনগরে এই বীর যোদ্ধার স্থাপিত মর্মর মূর্তির চরম অসম্মান। এ নিয়ে ধর্মনগরের সাধারণ জনগনের মধ্যে ক্ষোব দেখা দিয়েছে। কেননা অনান্য বছর এই মূর্তির পাদদেশে বেশ ঘটা করেই বামেরা শ্রদ্ধাঞ্জলি দিত। শ্লোগান তুলতো 'শহীদ ভগৎ সিং তোমায় মোরা ভুলছি না ভুলবো না'। কিন্তু এবার ভগৎ সিং এর জন্মদিনে এই মূর্তির দিকে ঘুড়েও কেও তাকালো না। ধর্মনগর ডিএনভি ময়দানের পাশে স্থাপিত এই মূর্তিটির সামনে দিয়েই যেতে হয় ধর্মনগরের সিপিআই এম কার্যালয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ভগৎ সিং এর জন্মদিনেই মূর্তিটিতে একটা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে ইচ্ছে হলো না তাদের। কেননা সোমবারও তারা রোজকারের মত এই মূর্তির সামনে দিয়েই পার্টির কার্যালয়ে গেছেন।
এদিকে আবার সোমবার সকাল হতেই সামাজিক মাধ্যম ফেইস বুকে ভগৎ সিং কে তার জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলিতে ভরিয়ে তুলেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে রাম বাম সবাই ছিলেন। কিন্তু তারা তাদের বিপ্লবটা ঘরের চার দেয়ালের ভেতরে বসে মোবাইলের মধ্যেই সীমিত রেখেছেন। কি আর করবেন বলুন ডিজিটাল ইন্ডিয়া বলে কথা। তাই হয়তো আজকাল সশরীরে প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলিটাও ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। তবে এসবে একটা প্রশ্ন তো থেকেই যায় ভগৎ সিং কি এখন শুধু রাজনৈতিক পণ্য ? পাশাপাশি ধর্মনগর পুর পরিষদের উদ্যোগেই ২০১২ সালে এই মর্মর মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছিল। তবে কি তাদের মূর্তি স্থাপন করেই দায়িত্ব খালাস ? শহরের বহু রাস্তা যদি প্রতিবছর সংস্কারের কাজ হতে পারে তবে কি পুর পরিষদ অন্তত বছরে একবার মূর্তিটি ও মূর্তির চারি দিক রং করাতেই পারেন।
আর তার জন্মদিনের দিন মূর্তির গলায় এক খানা মালাতো ঝোলাতে পারেন ! কিছুই করলেন না তারা বরং সোমবার ধর্মনগর বাসী দেখেছে ভগৎ সিং এর মূর্তির গায়ের বহু পুরনো ঝলসানো রং আর গলায় কবেকার একটা নোংরা মালা। আবার অনেকেই মনে করছেন ধর্মনগর পুর পরিষদের যতটুকু দায়িত্ব আছে ঠিক তেমনি ধর্মনগরের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরেরও কিছুটা দায়িত্ব রয়েছে।
এই দপ্তর যদি শহরের বুকে স্থাপিত, নজরুল, রবীন্দ্রনাথ,বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মত মহা পুরুষদের মূর্তিতে যদি শ্রদ্ধা জানাতে পারে তবে ভগৎ সিং কে নয় কেন? শাসক দলের নেতাদের বীর বিক্রমের জন্মদিনে ধর্মনগরে স্থাপিত বীর বিক্রমের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে কেক কেটে ইলেকট্রিকের গাড়িতে উঠে মূর্তির গলায় মালা পারাতেও দেখেছে ধর্মনগর বাসী।
এভাবেই তো মহাপুরুষ দের শ্রদ্ধা জানাতে হয়। কিন্তু ভগত সিং জন্মদিনে তার মূর্তিকে হেলায় ফেলে রাখাকে ধর্মনগর বাসী ভগৎ সিং এর প্রতি অসম্মান মনে করেছে। অবশেষে সোমবার বিকেলে সংবাদ করতে গিয়ে ধর্মনগরের কিছু সংবাদ কর্মীদের এই দৃশ্য নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গেই জনা কয়েক সংবাদ কর্মী সোমবার সন্ধ্যায় মিলত হয়ে ভগৎ সিং এর মূর্তির সম্মুখে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
0 মন্তব্যসমূহ