বক্সনগর প্রতিনিধিঃ সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপাশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের দুর্দশার কাহিনী নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবার তার থেকে রেহাই পায়নি ছয় সদস্যের মেডিকেল টিমও। ঘটনাটি কলমচৌড়া থানার অন্তর্গত রহিমপুর পঞ্চায়েত এলাকার সীমান্তের ১৬৬ নং কাটা তারের বেড়া সংলগ্ন স্থানে।সেখানে আজ সকাল ১০ ঘটিকায় বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম সীমান্তের কাটা তারের বেড়ার বাহিরে থাকা শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের টিকাকরণ করার জন্য যায়। কিন্তু সীমান্তে দায়িত্বরত জওয়ানদের অবহেলায় সেখানে এই মেডিকেল টিমকে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পরবর্তীতে আশাবাড়ি বিএসএফ ক্যাম্প থেকে দুজন জোয়ান এসে সীমান্তের গেট খুলে দেয়।
গেইট খুলে দেওয়া হলে বিশেষ মেডিকেল টিমের কর্মীরা মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই ৫ জন গর্ভবতী মহিলা এবং ১২ জন শিশু সহ মোট ১৭ জনকে টিকা করন শেষ করে দেয়। কিন্তু এই টিকা করন শেষে আবার সেই গেইট খোলার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।এই মেডিকেল টিমের সাথে দুজন কর্মরত সাংবাদিকও দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমান করোনা কালীন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের এত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তা সত্বেও জোয়ানদের এমন গাফিলতির কারণে স্বাস্থ্য কর্মীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি নিয়ে সেখানে উপস্থিত থাকা জনৈক সাংবাদিক বক্সনগর ব্লকের বিডিও ধ্রুতি শেখর রায়কে জানালে।
উনার জরুরী পদক্ষেপে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ সীমান্তের গেইট খুলে দেয় এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখান থেকে চলে আসে।এর থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়, যেখানে মেডিকেল টিমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে সীমান্ত জওয়ানরা চরম ভাবে অবহেলা করেছেন সেখানে সাধারণ লোকেদের বেলায় কেমন চলবে। জানা গেছে ১৬৬ নাম্বার গেইট দিয়ে তারের বেড়ার ওপার প্রান্তে প্রায় ২৫ পরিবারের বেশি লোক বসবাস করছেন। কিন্তু তারা ভারতীয় নাগরিক হয়েও এক প্রকার পরাধীনতার জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সীমান্তে ডিউটিরত বিএসএফ জওয়ানরা নিজেদের মর্জি মতো গেইট খুলছেন এবং বন্ধ করছেন।
ফলে বেড়ার ওপারের সাধারণ মানুষ যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে এপারে আসতে পারছেন না। বর্তমান করোনা কবলে নার্সারি এবং বিদ্যালয় গুলো বন্ধ থাকায় সেইসব পরিবারের বাচ্চাদের লেখা পড়া সম্পূর্ণ লাটে উঠেছে। পূর্বেকার সময়ে স্কুল কলেজের দোহাই দিয়ে গেইট কিছুটা খোলা হলেও বর্তমানে সেটা সম্পূর্ণই বন্ধ রাখছে। ফলে বাচ্চাদের প্রাইভেট টিউশনও পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও হাট-বাজার, চিকিৎসা, ইত্যাদি জরুরী পরিষেবা থেকেও তারা প্রতিনিয়ত বঞ্চিত থাকছেন বলে জনৈক গ্রামবাসী জানান। তাছাড়র এলাকা বাসীর এমন দুর্ভোগের বিষয়টি নিয়ে বহুবার বিএসএফ এর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ এস ডি এম, ডি এম দের সাথেও বহু বার মিটিং করেও সেটার কোনো সুরাহা হয়নি।
0 মন্তব্যসমূহ