সবুজ ত্রিপুরা
১৮ অক্টোবর
মঙ্গলবার
নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ রাজ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য রূপ হল ডম্বুর জলাশয়। এই জলাশয়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মায়াবী রূপ যতবার দেখা যায় ততবারই মুগ্ধ হতে হয়। এই অপরূপ পর্যটন কেন্দ্রটির প্রচার দেশ বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ ডম্বুর জলাশয়ের নারকেলকুঞ্জে নবনির্মিত লগহাট উদ্বোধন করে একথা বলেন।
উল্লেখ্য, স্বদেশ দর্শন-১ প্রকল্পে নারকেলকুঞ্জে ২৩টি লগহাট নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে ১৫টির কাজ শেষ হয়েছে। এরজন্য ব্যয় হবে ৭ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। কানাডার ওডেন ফেব্রিকেটেড লগ হাটের আদলে এগুলি নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সদ্য ক্রয় করা অ্যাডভেঞ্চার ওয়াটার স্পোর্টস কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বহিরাজ্যে ত্রিপুরার পর্যটনক্ষেত্র সম্পর্কে কোন সম্যক ধারণা নেই। বিগত সরকারের আমলে পর্যটনক্ষেত্রের উন্নয়নে বলার মত কোন কাজই হয়নি। এখন রাজ্য সরকার পর্যটনের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এখন তিনি যখনই বহিরাজ্যে যান যেখানে ডম্বুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটনক্ষেত্র সৌন্দর্যের প্রচার করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, রাজ্য সরকার জাতি জনজাতিদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে চায়। সেই দিশাতেই কাজ করছে সরকার। এই সরকার মানুষের সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতি ঘরে সুশাসনের মাধ্যমে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ১০০ শতাংশ সফলতার জন্য কাজ করা হচ্ছে। রাজ্যে গত ১ বছরে দেশ বিদেশের প্রায় ৫ লক্ষ পর্যটক এসেছেন। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সরকার প্রথম থেকেই কাজ করে আসছে। তিনি আরও বলেন, জনজাতিদের সার্বিক কল্যাণে সরকার সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্যে আগরতলা এয়ারপোর্টের নামাকরণ মহারাজা বীর বিক্রমের নামে নামাকরণ করা, গড়িয়া পূজার ছুটি বাড়িয়ে ২দিন করা সহ টিটিএএডিসি'র সার্বিক বিকাশেও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। অচিরেই আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ১টি সুপার স্পেশালিটি ব্যবস্থা চালু হবে। দুটি মেডিকেল কলেজে আসনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তৃণমূলস্তরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের সার্বিক বিকাশে সরকার কাজ করছে, আগামী দিনেও জনগণকে পাশে নিয়ে রাজ্যের উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে রাজ্যের পর্যটন স্কুলগুলির বিকাশে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এডিবি-র মাধ্যমে আগামীদিনে ২০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। মন্দিরঘাট দিয়ে
হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন
নারকেলকুঞ্জে আসার রাস্তার উন্নতিকরণ করা হচ্ছে। নতুন হ্যালিপেড নির্মাণ করা হয়েছে। গন্ডাতুইসা হয়ে নারকেলকুঞ্জে আসার জন্য ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করা হবে। তিনি আরও জানান, তীর্থমুখ ও ভুবনেশ্বরী মন্দিরের উন্নতিতে প্রসাদ স্কিমে কাজ করা হবে। পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্ট যেকোন ব্যবসায় দপ্তরের পক্ষ থেকে স্বল্পসুদে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বলেও এদিন জানান পর্যটনমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সাংসদ রেবর্তী ত্রিপুরা বলেন, রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সময়ের মধ্যে রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করে চলছে। তিনি স্থানীয় মানুষদের বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের সাথে সেবা ও সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে উত্তর-পূর্বে ২ হাজারটি হোমস্টে এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, নারকেলকুঞ্জে প্রতিটি লগহাটে রয়েছে ১টি করে বেডরুম, ড্রয়িং রুম, টয়লেট ও ব্যালকনি। পর্যটকদের জন্য থাকবে জেটস্কি রাইডিং, সাইট সিং এর স্পীড বোট, মাছ ধরার ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানে পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী সহ সকল
অতিথিদের হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হয়। তাছাড়া প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচিতে ৪টি স্বসহায়ক দলকে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণের টাকা চেকের মাধ্যমে তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, এমডিসি ভূমিকানন্দ রিয়াৎ, ধলাই জেলার জেলাশাসক ইউ কে চাকমা ও সুপারিনটেনডেন্ট রমেশ চন্দ্র যাদব। অনুষ্ঠানে ককবরক ভাষায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে।
0 মন্তব্যসমূহ