খবর প্রকাশ হয়ে চার দিন পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনি কোন প্রশাসনিক প্রতিনিধির-Sabuj Tripura

 

সবুজ ত্রিপুরা

২১ সেপ্টেম্বর

বুধবার

তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধিঃ খবর প্রকাশ হয়ে চার দিন পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনি কোন প্রশাসনিক প্রতিনিধির। পৌছায়নি কোন সহযোগিতার হাত অভাবের তারনায় চুরির পথ বেছে নেওয়া নাবালক অন্তুমনির দিকে। তবে কি ধরে নেওয়া যেতেপারে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য কেও নেই। 

গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাল ক্রয় করার জন্য টাকার অভাবে মাত্র ৭০ টাকা চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পরে অমানবিক ভাবে প্রচন্ড প্রহারের শিকার হয়েছিল নাবালক অন্তুমনি দেববর্মা।প্রসঙ্গত, মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের অধীন তুইমধু এলাকার এক নাবালক যুবক তথা অন্তুমনি দেববর্মা দীর্ঘ কয়েক বছর পূর্বে নিজের পিতা মাতাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ে। কিন্তু পিতা-মাতাকে হারিয়ে তার মাথায় হাত রাখার মতো কোন সহৃদয় ব্যাক্তি এগিয়ে আসেনি। আর তার ফলেই সে অন্ন-বস্ত্রের জন্য সমাজের সঙ্গে প্রায় প্রত্যেকদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যেখানে রাজ্যের স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের বিভিন্ন এলাকাগুলির মতো তুইমধু এলাকায়ও কর্মসংস্থানের অভাব, সেখানে অন্তুমনি দেববর্মা নামের ওই নাবালক যুবক অসহায় হয়ে পড়ে। যদিও তার বাড়িতে প্রায় ৯০ উদ্ধো বৃদ্ধা ঠাকুরমা রয়েছেন, তিনি বার্ধক্য জনিত রোগে কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে একপ্রকার গৃহবন্দী। চোখেও দেখতে পাননা ভাল করে। এর উপর আবার পরিবারের পরিত্যক্তা তার পিসির বিকলাংগ শিশু কন্যা সন্তানের ভরন পোষনের দ্বায়িত্ব। অন্তুমনি দেববর্মা'কেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বিগত কিছুদিন ধরে কোন কাজের সন্ধান না পাওয়াতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে ক্ষিদের জ্বালায় তেলিয়ামুড়া নেতাজি নগর এলাকা 

থেকে ৭০ টাকা চুরি করতে বাধ্য হয়েছে, তাও আবার এক কিলো চাল ক্রয় করার জন্য বাধ্য হয়ে এক দোকান থেকে ৭০ টাকা চুরি করার সময় হাতেনাতে এলাকাবাসীরা পাকড়াও করে। পরবর্তীতে হাত বেঁধে অন্তমনি দেববর্মা'কে শারীরিক ও মানসিকভাবে দীর্ঘক্ষন অত্যাচার করে ওই এলাকার একাংশ এলাকাবাসীরা। এযেন এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সভ্য সমাজকে কলুষিত করার লজ্জাকর চিত্র প্রকাশ্যে এলো তেলিয়ামুড়ায় গত শুক্রবার। পরবর্তীতে ঘটনার খবর পাঠানো হয় তেলিয়ামুড়া থানায়, থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই  নাবালক যুবককে হাতে দড়ি বাঁধা অবস্থায় থানায় নিয়ে আসে। দীর্ঘক্ষণ তার হাতে দড়ি বাঁধা অবস্থায় থাকার ফলে হাতের রক্ত সঞ্চালন একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ ওই নাবালক যুবককে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে এনে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে তেলিয়ামুড়া থানায় নিয়ে আসে। যদিও তার বিরুদ্ধে কোন মামলা-মোকদ্দমা করা হয়নি। কিন্তু সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেয়নি তথাকথিত সমাজ সেবকমহল। মঙ্গলবার তার তুইমধু এলাকার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সংবাদপত্রে সম্প্রচারিত খবর দেখে রাজধানী আগরতলা থেকে কয়েকজন যুবক তার পরিবারের হাতে ৬০ কেজি চাল দিয়ে আসে। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে কোনও সাহায্য এখনো পৌছায়নি এই পরিবারের হাতে। অন্তুমনির পরিবারের বাস্তব চিত্র আমদের ক্যামেরায় যা উঠে আসে তা সামনে থেকে প্রত্যক্ষ না করলে 

উপলব্ধি করা মুসকিল। তবে জানা যায়, রেশন থেকে সামগ্রী এবং বয়স্ক ভাতাই একমাত্র রোজগারের মাধম্য। কিন্তু বৃদ্ধা নানি ( ঠাকুমা)  ও পিসির বিকলাঙ্গ শিশু কন্যা সন্তানের চিকিৎসা যে এই সামান্য রোজগারের মাধ্যমে কোন প্রকারে সামলাতে পারছেনা নাবালক অন্তুমনি।তবে অন্তুমনি অকপটে জানায় আমকে যদি সাহায্য করা হয় তাহলে ওই ভাবে আর চুরি করবেনা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu