সবুজ ত্রিপুরা
১৮ জুলাই
সোমবার
কদমতলা প্রতিনিধিঃ পাথারকান্দি সমষ্টির ইচাবিল বাগানে চলিত উচ্ছেদ আভিযানে শনিবার প্রথম দিনে নব্বইটি বসত বাড়ী গুড়িয়ে দেওয়ার পর রবিবার দ্বিতিয় দিনে একই কায়দায় ইচাবিল ও ইচারপার মৌজায় বুল ডোজার দিয়ে উচ্ছেদ
চালিয়ে আরও একাত্তরটি দোকান গৃহ সহ বসত বাড়ী গুড়িয়ে দেয় প্রশাসন।পাশাপাশি এদিন সার্কেল প্রশাসনের পক্ষে বেদখলমুক্ত স্থান সমুহে সরকারি ভাবে সতর্কীকরণ সাইন বোর্ডও লাগিয়ে দেওয়া হয়।দু দিনের অভিযানে এলাকার প্রায় সাড়ে সাত হাজারের অধিক লোক গৃহহারা হবার খবর পাওয়া গেছে।সব মিলিয়ে বর্তমানে বৃহত্তর কটামণি এলাকার আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে উচ্ছেদিত জনগনের বুক চাঁপড়ানো আর্তনাদে।প্রশাসনিক উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য সরকারকে নতুন করে কোনও ব্যবস্থা গ্রহনের খবর নেই।এদের অনেকে পড়শী সহ আত্মিয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রায় নিলেও অনেকে খোলা আকাশের নিচে ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে তাবু খাটিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই করেছেন।শনিবারের ন্যায় রবিবার সকাল দশটা থেকে বিশাল আধা সামরিক বাহিনী পুলিশ সহ বর্জ ও সেফ গার্ড হাতে নিয়ে বিপুল সংখ্যক
হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন
সেনা কর্মীরা উচ্ছেদ অভিযান চালায়।সার্কেল অফিসার অর্পিতা দত্তমজুমদারের নেতৃত্বে এদিন কটামনি বাজারের পচিশটি দোকান সহ তেজপুর ও পাতিয়ালায় পৃথক পৃথক ভাবে ছেচল্লিশটি ছোট বড় কাচা পাকা বসত বাড়ী ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় প্রশাসনের কাজে ব্যবহৃত কুড়িটি জেসিবি।এতে উপস্থিত ছিলেন ডিসি মুদুলকুমার যাদব সহ সাউদার্ন ডিআইজি কঙ্কনজ্যোতি শইকিয়া এসপি পদ্মনাভ বরুয়া এএসপি পার্থপ্রতিম দাস ডিএসপি(সদর)গীতার্থ দেবশর্মা এডিসি জেমস আইন্ড এডিসি বিপুলকুমার দাস ওসি চিরঞ্জিৎকুমার বরা প্রমুখ।প্রশাসনের এহেন অভিযানে এলাকার একাংশ জনগন খুশি ব্যক্ত করলেও অনেকে প্রশাসনের এমন হটকারি সিদ্ধান্তে নারাজ সহ স্থানীয় ভুমিহীন ব্যক্তিদের পুনর্বাসন না দিয়ে উচ্ছেদ করায় বিজেপি সরকারের মুন্ডুপাত করেছেন।প্রথম দিনের অভিযানে অনেকে নিজেদের ভুমি সংক্রান্ত কাগজ পত্র প্রশাসনিক কর্তাদের দেখালে তা গ্রাহ্য হয়নি।কিন্তু রবিবারের চলা অভিযানে অনেকের কাগজ পত্রকে মান্যতা দেয় প্রশাসন।ফলে উচ্ছেদের হাত থেকে রক্ষা পান একাংশ জনগন।এনিয়ে এলাকার সচেতন মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।একাংশ ভুক্তভোগীদের কথায় এক নেতার ইশারায় দেখে দেখে উচ্ছেদ করছে প্রশাসন।ফলে বৈধ নথি না থাকা সত্বেও অনেকে সোশ্যাল মিডিয়া খ্যাত বুল ডোজার দাদার কৃপায় পার পেয়ে যাচ্ছেন।তাছাড়া সমষ্টির অন্যান্য স্থানে কেন উচ্ছেদ অভিযান চলছে না,এনিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন অনেকে।তাছাড়া টাকা নিয়ে কাগজ বানিয়ে দেওয়া পাথারকান্দি সার্কেল আমিন আব্দুর রৌফকেও অনেকে জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।এদিকে রবিবারের অভিযান শেষে সিও অর্পিতা দত্তমজুমদারকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান যে গণ অভিযোগের ভিত্তিত্বে যাবতিয় আইন কানুন মেনে দীর্ঘ
দেড় মাস সময় ধরে জবরদখলকারিদের দফায় দফায় অবগত করে শেষে বাধ্য হয়ে সরকারি নির্দেশে ইচাবিল বাগানের প্রায় বার`শ বিঘা সরকারি জমি জবরদখল মুক্ত করতে প্রশাসনকে বাধ্য হয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামতে হয়।এতে প্রশাসনের পক্ষে কারও সাথে কোন অন্যায় অবিচার করা হয়নি।তৎকালিন সময়ে কোন দুষ্টচক্র অনেককে টাকারচ বিনিময়ে নকল কাগজ বানিয়ে দিয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।ওদেরকে চিহ্নিত করে তাদের নামে মামলা ঠুকার পরামর্শ দেন তিনি।পাশাপাশি তিনি আরও জানান যে ইচাবিলে প্রথম পর্যায়ে চলিত দুদিনের উচ্ছেদ
অভিযান সফল হয়েছে।ছোটখাটো বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া এতে কোন অপ্রিতির কান্ড ঘটেনি।দুদিনে মোট ১৬১ টি বসত বাড়ী সহ দোকান গুড়িয়ে দেওয়া হয়।পুনরায় সরকারি ও নির্দেশ আসার পর পর্যায়ক্রমে রাধামাধবপুর কীর্ত্তে রশিদপুর,রাধামাধবপুর কীর্ত্তে হোসেনপুর ও কটনপুর মৌজাতেও উচ্ছেদ অভিযানে নামবে প্রশাসন।
0 মন্তব্যসমূহ