সবুজ ত্রিপুরা
৫ জুলাই
মঙ্গলবার
নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ সাংবাদিকতা একটি অত্যন্ত মহৎ পেশা। সংবাদমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। তাই এই মহান পেশাকে আরও সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব সাংবাদিকদেরও নিতে হবে। বর্তমান সরকার মিডিয়া বান্ধব। সংবাদমাধ্যমের উন্নয়নেও
বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার। আজ আগরতলার অরুন্ধতীনগরের সিপার্ডে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত দুদিনের কর্মশালার উদ্বোধন করে একথা বলেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য বীমায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পরিষেবার সুযোগ থাকবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের সংখ্যা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে ও সিপার্ডের সহযোগিতায় প্রথম পর্যায়ে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে দুদিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আগামী ১১ ও ১২ জুলাই বৈদ্যুতিন প্রচার মাধ্যমের সাংবাদিক এবং ১৪ ও ১৫ জুলাই ওয়েব মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মশালায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বা ওয়েব মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক
হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন
মিডিয়ায় প্রচারিত তথ্যগত কোনও ভুল নজরে এলে তা সংশোধন করার সুযোগ থাকে। কিন্তু এটা প্রিন্ট মিডিয়াতে সম্ভব নয়। কারণ প্রিন্ট মিডিয়াতে যা প্রকাশিত হয় তা একেবারে পার্মানেন্ট বা স্থায়ী নথি হয়ে থাকে। একবার প্রকাশিত হয়ে গেলে সেটা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করে এবং সত্যতা যাচাই করেই সংবাদ পরিবেশন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সংবাদমাধ্যমের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট আন্তরিক। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সাংবাদিকদের খবর পরিবেশন করা দরকার। নেতিবাচক মানসিকতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে নৈতিক দায়িত্ববোধ মেনে সংবাদ করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজ্য অতিথিশালায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সাংবাদিকদের পেশাগত ক্ষেত্রে আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে কর্মশালা করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সাংবাদিকতা করা কাম্য নয়। কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে খবর করলে সেই ব্যক্তির বক্তব্যও সংবাদে থাকা উচিত। তাই এধরণের সাংবাদিকতা কোনোমতেই কাম্য নয়। এসমস্ত প্রবণতা থেকে দূরে থাকতে হবে। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী এই কর্মশালার সাফল্য কামনা করে আগামীতে এধরণের আরও কর্মসূচির আয়োজন করার উপর গুরুত্ব তুলে ধরেন। কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি রায়পুরের কুশাভাউ ঠাকরে ইউনির্ভাসিটি অব জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর বলদেও ভাই শর্মা সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এই পেশায় থেকে কিভাবে মানুষের জন্য আরও ভালো কাজ করা যায়। সেটা ভাবতে হবে। সমাজের জাগরণের জন্য কাজ করতে হবে। ফেইক নিউজ বা বিভ্রান্তিকর খবর থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ মিথ্যে খবর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারায়। মনে রাখতে হবে সত্য এবং তথ্য এই দুই বিন্দুর মধ্যে থেকে সাংবাদিকদের কাজ করতে হয়। সাংবাদিকদের উপর জনগণের বিশ্বাস ও অনেক আশা ভরসা রয়েছে। তাই সমাজের সার্বিক কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে অটুট রাখতে হবে। মানুষের সাথে যে
উদ্বোধনী পর্ব শেষে সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাচক্র। এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আলোচনা করেন রায়পুরের কুশাভাউ ঠাকরে ইউনির্ভাসিটি অব জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর বলদেও ভাই শর্মা। তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল - রোল অব মিডিয়া অন গভর্নমেন্টাল স্কিমস অ্যান্ড ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রামস'। 'নিউ চ্যালেঞ্জেস অব জার্নালিজম' নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখর দত্ত। 'এথিক্স অ্যান্ড মরালিটি ইন জার্নালিজম' বিষয়ে আলোচনা করেন ভোপালের মাখনলাল চতুর্বেদী ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের ডাইস চ্যান্সেলর কে জি সুরেশ। আগামীকাল প্রথম পর্যায়ের কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বিশিষ্ট বক্তাগণ।
0 মন্তব্যসমূহ