প্রয়াত কৃষি বৈজ্ঞানিক বাহারুল ইসলাম মজুমদার-Sabuj Tripura

 

সবুজ ত্রিপুরা 

১৬ মার্চ
বুধবার
বক্সনগর প্রতিনিধিঃ  চলে গেলেন রাজ্যের কৃষি বিজ্ঞানী এবং বহু সম্মানে সম্মানিত ও ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের  চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম মজুমদার।

তিনি সোমবার জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আনুমানিক ১১টা ৪০মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।তিনি ছিলেন রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী মনসুর আলী সাহেবের বড় ছেলে।তারা দুই ভাই চার বোনের পরিবার ছিলেন। সকলের মধ্যে বড় ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন বাহারুল ইসলাম মজুমদার।গত তিন মাস আগে তার ছোটভাই মজিবুর ইসলাম রাজনৈতিক সংঘর্ষে আক্রান্ত হয়ে পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলকাতায় একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়। তিনি তার অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন রাজ্য কৃষি দপ্তরের ডাইরেক্টর হিসেবে। চাকরি অবসর পাওয়ার ১ বছর পূর্বে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন। ভারতের জনতা পার্টিতে যোগদান করেই ২০১৮ সালে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন। 

পরবর্তী সময়ে তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের চেয়ারম্যান পদে আসীন হন।পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টির সংখ্যালঘু মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন।আর এই গুণ মুগ্ধকর জীবনে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছিল।বাহারুল ইসলাম মজুমদারের পরিবার ছিল রাজ্যের একটি খ্যাতনামা রাজনৈতিক পরিবার।ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে প্রথম যে একই পরিবার থেকে চারজন ভারতের রাজনৈতিক' জাতীয় দল থেকে বিধানসভার প্রার্থী হয়েছেন।সোনামুড়া মহাকুমার মুসলিম সমাজের একটি গর্ভের বিষয় বলে আখ্যা দেন রাজনৈতিক মহল। তার বাবা মনসুর আলী সত্তর থেকে আশির দশকে তৎকালীন সময়ে কংগ্রেসের হয়ে একজন দাপুটে কৃষি মন্ত্রী ছিলেন।একসময় তিনি ত্রিপুরা রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। প্রাক্তন মন্ত্রী মনসুর আলী সাহেব প্রয়াতঃ হওয়ার পর বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে তার স্ত্রী তাহেরা বেগম মহোদয়া কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে লড়াই করেন।তারপর তার ছোট ভাই মজিবুর ইসলাম মজুমদার সোনামুড়া মহাকুমার ধনপুর কেন্দ্র থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস হয়ে লড়াই করেন বলে জানা যায়। গত ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দুই ভাই দুই দলের পক্ষ থেকে দুই কেন্দ্র থেকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হয়েছিলেন।সোনামুড়া তাদের পরিবারকে মন্ত্রিবারি বলে আখ্যায়িত করা হয়।তিন মাসে দুই ভাই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান।বহু গুণে গুণান্বিত বাহারুল ইসলাম মজুমদারের মৃতদেহ নিজ মহাকুমা সোনামুড়া আসা মাত্রই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সোনামুড়ার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।প্রথমে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ভেলোয়ারচড় পার্টি অফিসে শ্রদ্ধা জানান। তারপর চলে আসে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টি মন্ডল অফিস কার্যালয়ে।সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সভাপতি দেবব্রত ভট্টাচার্য, বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সঞ্জয় সরকার,ভাইস চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া,মন্ডল সভাপতি সুভাষ চন্দ্র সাহা,যুব মোর্চার সভাপতি জিমুল হক সহ বহু নেতৃত্বরা পুষ্প মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।তাছাড়াএই গুণ মুগ্ধকর ও বহু গুণে গুণান্বিত বাহারুল ইসলাম মজুমদার কে সিপিএম ও কংগ্রেস এবং বক্সনগর প্রেসক্লাবের সমস্ত সাংবাদিকরা তাকে পুষ্প মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। 
তারপর নিয়ে যাওয়া হয় জন্মভূমি সোনামুড়া দূর্গাপুর এলাকা এলাকায়।জন্মভূমি সোনামুড়া দূর্গাপুরে নিয়ে গেলে তার আত্মীয় স্বজনসহ গোটা এলাকার মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।প্রয়াত বাহারুলের নিজস্ব বাসভবনে বিকাল ৫ ঘটিকায় ইসলামিক রীতিনীতি মেনে তাকে সমাধি করা হবে বলে জানান তার নিকটাত্মীয়রা। বাহারুল ইসলাম মজুমদারের প্রয়াণে সোনামুড়া বিজেপির নেতৃত্বরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানান যে এটা শুধু সোনামুড়া মহাকুমা নয় সারা রাজ্যের এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে আখ্যায়িত করেন।তার এই শূন্যস্থান কোনদিন পূরণ হবে বলে মনে করা যায় না।তার মৃত্যুতে সোনামুড়া মহাকুমা সহ গোটা রাজ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu