সোনামুড়া মহাকুমায় সাত সকালে শিশু উদ্ধারকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য-Sabuj Tripura


সবুজ ত্রিপুরা 
২৮ ডিসেম্বর

মঙ্গলবার

বক্সনগর প্রতিনিধিঃ নিজের মা খোলা আকাশের নিচে ফেলে দিলেও সদ্যোজাতের ডাক সহ্য করতে পারেননি সেবিকা। আমি বলি মা মা, মায়তো কানে শোনে না।বহু প্রচলিত এই বাক্য প্রবাদটি কে রচনা করেছেন জানা নাই।আবহমান কাল থেকে চলে আসছে মায়ের নিষ্ঠুরতা নিয়ে এই ধরনের কাব্যকথা। মূলত হিন্দুদের দেবী দুর্গার বিসর্জনকে 

কেন্দ্র করে এই বাক্য প্রবাদটি এখনো রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের সুরে গাওয়া হয়।দেবী দুর্গার বিদায়ের দিন বিজয়া দশমীতে এই কথা বলার মাধ্যমে দেবীকে যেন আবারো আবহন করা হয় পরের বছরের জন্য।তবে বর্তমান সভ্য সমাজের মায়েদের একাংশ সত্যিই যেনো নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে।নিজের নাড়ি ছেঁড়া ধন সন্তানকে অবলীলায় আজকের দিনে মায়েরা ফেলে দেন খোলা আকাশের নিচে।এমনই মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটেছে সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া মহাকুমার এলাকায়। মহাকুমার মেলাঘর থানাধীন বগাড়বাসা এলাকায়।এক 

রাবার বাগানে সোমবার সাতসকালে খুঁজে পাওয়া গেছে এক সদ্যজাত শিশুকে।আসলে এসব ঘটনা সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত নির্দেশন মাত্র।সভ্য সমাজ যেন এসব ঘটনার কারণে নিজেদের কাছ থেকে নিজেদের মুখ লুকাতে চাইছে।তবে এই মুখ লুকানোর চেষ্টা কতটা আন্তরিক আর কতটা দেখনদাড়ি তা বলা কঠিন।ঐ এলাকার চিন্ময় দেবনাথের রাবার বাগানের সদ্যোজাত শিশু সন্তানকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরো মহাকুমা জুড়ে।মা নিজেই তার রাতের পরনের কাপড় নাইটি দিয়ে মুড়িয়ে খোলা আকাশের নিচে রাবার বাগানের মধ্যে ফেলে গেছে সদ্যোজাত সন্তানটিকে।এমনি বক্তব্য রাখেন এলাকাবাসী। সন্তানের চিৎকারে নিজের মা হয়তো পিছু ফিরে চাওয়ার সময় পাননি 
চিৎকার কিন্তু অন্য আরেক মায়ের হৃদয় হরণ করেছে।পেশায় পরিষেবা স্টাফ নার্স।এই মা নিজেই গর্ভবতী।হয়তো এই কারণে সদ্যজাত সন্তানের বিশেষ ঢংগের চিৎকার তার কানে বেজেছে বেশি। তিনি ছুটে যান সন্তানটির কাছে।তিনি নাম গোত্র না-জানা সন্তানটিকে দ্রুত কোলে টেনে নেন। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন সাধ্যমতো।তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পরের সন্তানকে আপন করে নিয়ে তিনি হাসপাতালে উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও হয়তো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে সদ্যোজাত শিশু। মহিলা সদস্য শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে ঘটনাচক্রের পথে পাওয়া মেলাঘর থানার একটি গাড়িতে চেপে বসে। এই গাড়িটি কিছুদূর এগুতেই জুমেরডেপা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গাড়ি তার চোখে পড়ে।স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গাড়ি দিয়ে মেলাঘর সোনামুড়া মহকুমা হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে আসেন তিনি। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক যথাসম্ভব আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি শিশুটিকে।ডাক্তার বাবুর ধারণা শিশুটির হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।এই নিষ্ঠুরতার পাশাপাশি পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী মহিলার অদম্য প্রয়াস জনসমাজের ভালো-মন্দ দুইটি চিত্রকে পাশাপাশি তুলে ধরেছে। এই কারণেই হয়তো কবি বলেছেন কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক- কে বলে তা বহু দূর -এখানেতেই স্বর্গ-নরক,এখানেই সুরাসুর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu