HIV সংক্রমিতদের উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে রাজ্যে একটি জাতীয়মানের প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী-Sabuj Tripura

 

সবুজ ত্রিপুরা 

০২ ডিসেম্বর

বৃহস্পতিবার

নিজেস্ব   প্রতিনিধিঃ HIV সংক্রমিতদের উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে রাজ্যে একটি জাতীয়মানের প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। গতকাল বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। 

রোগ প্রতিরোধক ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ত্রিপুরা স্টেট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক বিশ্ব এইডস দিবসে এবারের ভাবনা “বৈষম্য দূরীকরণ এইডস নির্মল করা ও অতিমারীগুলি রুখে দেওয়া”। এইচআইভি সংক্রমিত হয়েও সেবামূলক অনন্য নজির স্থাপন ও নেশা আসক্তির পথ থেকে পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা বেশ কয়েকজনকে এদিন সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির একটি ওয়েবপোর্টালের আনুষ্ঠানিক সুচনা করেন। পত্রিপুরায় ড্রাগস এবং এইচআইভি-র কোনও স্থান নেই” বিশ্ব এইডস দিবসে এই অঙ্গীকার নিয়ে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ড্রাগসের মতো অশুভ শক্তি

                          হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

থেকে যুব সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে এবং এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে মহিলা সহ সবার সম্মিলিত আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সম্প্রতি এইচআইভি সংক্রমণের পরিসংখ্যানের দিকে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে রাজ্য সরকারের। সংক্রমিতদের  সনাক্তকরণের মাধ্যমে যথোপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এনএসএস সহ হেচ্ছাসেবক বিভিন্ন সংগঠনগুলিকে যুক্ত করা যেতে পারে৷ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাকে গোপন না রেখে সঠিক সময়ে চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যুব সম্প্রদায়ের সুনিশ্চিত এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে স্টার্টআপ, আইটি হাব সহ নানান উদ্ভাবনী পরিকল্পনার পথে অগ্রসর হচ্ছে সরকার তার আগে প্রয়োজন যুব সম্প্রদায়ের সুস্থ জীবনযাপন। এক্ষেত্রে ভূমিকা নিতে হবে সবাইকে। সমস্যার মুলে গিয়ে তার সমাধান নিরুলীকরণে দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী তার পাশাপাশি যেখানেই অস্বাভাবিক সংক্রমণের হার দেখা যাবে সেখানে অধিক সংখ্যায় পরীক্ষার মাধ্যমে চিহিতকরণ এবং সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ মুল্যায়নেরও নির্দেশ দেন। 


তিনি বলেন, এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে অন্যতম শর্ত হলো ড্রাগস এবং সিরিজের মাধ্যমে নেশাদ্রব্য ব্যবহার থেকে যুব সম্প্রদায়কে বিরত রাখা। চিকিৎসার পাশাপাশি এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন। এইচআইভি সংক্রমিত বা যারা ভুলবশত নেশার ফাঁদে পা দিয়েছেন তাদেরকে অস্পৃশ্য ভেবে দুরে সরিয়ে না রেখে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবনায় জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এইচআইভি সংক্রমিতদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে আধুনিক পরিষেবা সম্পন্ন জাতীয়মানের একটি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, নেশার কবল থেকে যুব সম্প্রদায়কে মুক্ত রাখতে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে মহিলাদের। রাজ্যে যেভাবে শিশু মৃত্ুর হার কমিয়ে আনা হয়েছে বা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে একইভাবে এইডসকেও প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা, শিক্ষা দপ্তর, আরক্ষা প্রশাসন সহ প্রয়োজনে অন্যান্য দপ্তরকে যুক্ত করে, সমাজের সকল অংশের নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নেশার মতো সামাজিক ব্যাধি ও এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী সান্তনা চাকমা বলেন, এইডসকে প্রতিহত করতে সবার আগে প্রয়োজন এইডস সম্পর্কে সম্যক ধারণা। জোরপূর্বক এই পথ থেকে তাদেরকে সরিয়ে আনার বদলে ভালোভাবে বুঝিয়ে সঠিক চিকিৎসার সুযোগ পৌছে দিতে পারলেই স্বার্থকতা মিলবে। এইচআইভি সংক্রমিতদের মধ্যে যোগ্য সুবিধাভোগীদের সমাজকল্যাণ দপ্তর থেকে সামাজিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে তার পাশাপাশি যারা নতুনভাবে সংক্রমিত হচ্ছে তাদেরও এই তালিকায় সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া চলছে।

এই সমস্যা দূরীকরণে সবার সম্মিলিত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন মন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সিনহা বলেন, এইডসের চিকিৎসা পরিষেবার বিকেন্দ্রীকরণে কাজ করছে সরকার। খুব সহসাই যেন আক্রান্তদের কাছে চিকিৎসার সুফল পৌছে দেওয়া যায় সেই লক্ষ্যে গুচ্ছ পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে।

এরজন্য প্রয়োজন জনভাগিদারি। জনজাগরণ তৈরি ও সহায কাজ করতে স্বাস্থ্য দপ্তর ও এনজিওদের পরামর্শ দেন তিনি। তার পাশাপাশি এইডস বা এইচআইভি সংক্রমণ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাপত্র চর্চা লব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে তার ব্যবহারিক প্রয়োগ বাড়ানোর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। করোনার মতো এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং তার স্থায়ী সমাধানেও সবার প্রচেষ্টায় সাফল্য আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা তথা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রকল্প অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস দেববর্মী প্রমুখ।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu