ঘুষ কান্ডে নাম জড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাথারকান্দির এসআই জেপি সিং গ্রেফতার-Sabuj Tripura
সবুজ ত্রিপুরা
১৮ ডিসেম্বর
শানিবার
কদমতলা প্রতিনিধিঃ রাজ্য সরকারের কড়া রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে আজও রাজ্যের একাংশ থানায় সমান্তরাল ভাবে অব্যাহত রয়েছে চা পানের নাম করে প্রণামী আদায়ের সক্ষম কৌশল।পাথর বালু কয়লা সুপারি সার
কাঠ এমনকি সর্বনাশা ড্রাগস সিন্ডিকেটেও একাংশ পুলিশ কর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।তাছাড়া ছোটখাটো দরকারে পুলিশের দ্বারস্থ হলে ভুক্তভোগীদের গুণতে হয় চা পানের খরচা।দেরিতে হলেও এমনই এক অভিযোগ উঠে এল পাথারকান্দি পুলিশের এক এসআইর বিরুদ্ধে।এমনকি এ কান্ডের ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়েছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।এতে স্বাভাবিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন।পুলিশ সুপার থেকে ডিএসপি ব্রাঞ্চ এ বিষয় নিয়ে জোর তদন্তের পথে হাটছেন।ঘটনার বিবরণে প্রকাশ গত দুর্গা পূজার বিজয়া
দশমীর পরদিন অর্থাৎ ঘোল অক্টোবর রাতে পাথারকান্দি আছিমগঞ্জ বাইপাস সড়কে দুটি ছোট বাহনের মধ্যে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়।পরবর্তিতে স্থানীয় পুলিশ তদন্তে নেমে একটি বাহনের মালিকের কাছ থেকে প্রণামী বাবদ দুটি পর্যায়ে মোট সাত হাজার টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ।আর এসব লেনদেনের দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় কৌশলে ধারন করে নেন এক ব্যক্তি।উক্ত ভিডিওটি গত দুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে।ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে পাথারকান্দি থানার এক পুলিশ কর্মী দর কষাকষির পর উৎকোচ নিচ্ছেন এক ব্যক্তির হাত থেকে।পাশে দাড়িয়ে রয়েছেন আরেক পুলিশ কর্মী সহ জনাকয় গাড়ির মালিক পক্ষের লোক।জানা গেছে এ কান্ডে উৎকোচ গ্রহন কারি পুলিশের এসআইর নাম জিতেন্দ্রপ্রসাদ সিং।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর কোনও প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও ফোনযোগে গাড়ির মালিকের সাথে কথা বললে তিনি ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে সবকিছু স্পষ্ট করে দেন।তিনি জানান যে উনার নাম প্রেমধন নাথ।কর্মসুত্রে তিনি গুয়াহাটিতে থাকেন।বাড়ি করিমগঞ্জের মহিশাসনে।গত দশমীর পূজার পরদিন তিনি নিজের শ্বশুরবাড়ী ত্রিপুরার ধর্মনগর থেকে নিজের হোন্ডাই ক্রোটা গাড়িতে চেপে পরিবারের লোকদের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন।তাদের
গাড়িটি যখন পাথারকান্দির বাইপাস সড়ক ধরে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই করিমগঞ্জ থেকে মিজোরামগামী একটি সুমো গাড়ীর সাথে তাদের গাড়ীর সংঘর্ষ হয়।এতে উনার গাড়ীটির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হলেও দুটি গাড়ীতে হতাহতের মত ঘটনা ঘটেনি।পরে বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তাদের গাড়ীটি থানায় নিয়ে যায় ও অল্প বিস্তর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়।তখন তার কাছ থেকে অভিযুক্ত জেপি সিং নগদ দু হাজার টাকা চেয়ে নেন।পরবর্তিতে নানা টানপোড়ানের পর এমভিআই করিয়ে দেবার নামে আরও পাচ হাজার টাকা নেন এসআই।এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।নাথ বাবুর কথায় তিনি যেহেতু কর্মসুত্রে গুয়াহাটিতে থাকেন তবুও তাকে বার বার থানায় ডেকে এনে কারনে অকারনে হয়রানি করা হয়েছে।এমনকি শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে তদন্ত রিপোর্ট সংক্রান্ত কাগজপত্রও দেয়নি।অবশেষে তিনি পুলিশের ভুমিকায় অতিষ্ট হয়ে এই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সুবিচারের দাবি করেছেন।এদিকে এ বিষয়ে শুক্রবার পুলিশ সুপার পদ্মনাভ বরুয়ার নির্দেশে থানায় ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ যাদব।তিনি প্রাথমিক তদন্ত শেষে আজই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার করে জেলা সদরে নিয়ে যান।এএসপি জানান ধৃতের বিরুদ্ধে অপরাধমুলক মামলা রজু করা হয়েছে।পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কেননা প্রকাশিত ভিডিওর সাথে অভিযুক্তের যোগসাজের প্রমাণ পাওয়া গেছে।দু নাম্বারি কান্ডে কোনও পুলিশ কর্মীকে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকে রেয়াত করা হবে না।তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছে আরও বলেন যে কোথাও পুলিশি ক্রাইম সংঘটিত হলে তা যেন তড়িঘড়ি সংশ্লিষ্ট মহলের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়।সমুহ ঘটনায় ধারনা করা হচ্ছে যে ধৃত পুলিশ কর্মীকে আইনি প্রক্রিয়ার পর বিভাগীয় পক্ষে বরখাস্থও করা হতে পারে।জেলা প্রশাসনের এহেন ভুমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকার নচেতন মহল।এমন ঘটনায় স্থানীয় জনমনে একরাশ জল্পনা কল্পনারও সৃষ্টি করেছে।কেননা পাথারকান্দি সমষ্টির বিভিন্ন থানা ওয়াচপোষ্ট ও পেট্রলপোষ্টে একাংশ ঘুষখোর পুলিশ কর্মীরা এই ঘটনায় কিছুটা হলেও বাগে আসতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ