জি-নেক্সট মডেল স্কুলে ১০০% মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ, বিদ্যালয়ে এবার একাদশ শ্রেণীর সংযোজন - Sabuj Tripura

সবুজ ত্রিপুরা 
১০ আগস্ট
মঙ্গলবার


তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধিঃ মনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি,একাগ্রতা ও কিছু করার মানসিকতা থাকলে শত বাধা কে পেছনে ফেলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব তা প্রমাণ করে দেখালো পাড়াগাঁয়ের এক 

শিক্ষানুরাগী।খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহকুমার অন্তর্গত তেলিয়ামুড়া ব্লকের অধীনে পশ্চিম হাওয়াইবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা রবি চৌধুরী। নিজ প্রচেষ্টায় ও কিছু করার মানসিকতা নিয়ে 

শিক্ষার প্রতি অগাধ ভালোবাসা কে পাথেয় করে ২০১২ সালে গড়ে তুলেছিল জি-নেক্সট মডেল স্কুল। পাঁচ কানি জায়গার উপর নির্মিত স্কুলে নার্সারি থেকে ক্রম পর্যায়ে হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয়। এ বছর এই 

ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় থেকে প্রথম মাধ্যমিক পাস করে ১০০%। বিদ্যালয়ের সকলেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে ১ ছাত্র্রের নাম্বার ৯৬ শতাংশের উপর। এবছর এই বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণিও 

হতে চলেছে। বিজ্ঞান বিভাগ ও কলা বিভাগ চালু করতে যাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মোট ৪০টি আসনের মধ্যে ২০ টি বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এবং ২০টি কলা বিভাগের জন্য।

উল্লেখ্য থাকে যে।তেলিয়ামুড়া তে বেসরকারিভাবে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় রয়েছে আনন্দমার্গ হাই স্কুল , হলিক্রস হাই স্কুল, আসাম রাইফেল হাই স্কুল এবং কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়। কিন্তু একটি বিদ্যালয় ও 

মাধ্যমিকের পর একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ এর ব্যাবস্থা না থাকায় এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্সের সুবিধা তেলিয়ামুরাতে না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের আগরতলা মুখি হতে হতো। এতে নানা সমস্যায় পড়তে 

হতো অভিভাবকদের। এবার এই জি-নেক্সট মডেল স্কুল চালু করতে যাচ্ছে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগ। বিদ্যালয় রয়েছে উন্নত মানের ডিজিটাল ল্যাবরেটরি, তার সাথে জয়েন এন্ট্রান্সের সম্পূর্ণ পঠন-

পাঠনের ব্যবস্থা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সুনিপুন হাতে সাজিয়েছেন নিজ বিদ্যালয়ে কে। শুধু তাই নয়, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের কে যেন বিদ্যালয়ের বাইরে গিয়ে প্রাইভেট পড়তে না হয় 

তার জন্য বিদ্যালয় সমস্ত ব্যবস্থা করছে কর্তৃপক্ষ। ২০১২সাল থেকে তিলে তিলে গড়া উঠা এই বিদ্যালয় রাজ্য সরকার থেকে কোন আর্থিক সহযোগিতা না পেলেও কেন্দ্রীয় স্পাইস বোর্ড থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা সহযোগিতা পেয়েছি এখন পর্যন্ত।এবং স্পাইচ বোর্ড এই জি নেক্সট স্কুলের সঙ্গে টাই আপ করে করে আগামী দিনে এই 

বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে আরও এগিয়ে নিতে বদ্ধ পরিকর। ছাত্র-ছাত্রীদের  উন্নয়ন কল্পে  নতুন শিক্ষানীতি পদ্ধতি অবলম্বন করে এই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের যাতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় ,তার জন্য ফিশারি, এগ্রিকালচার, প্রাণিসম্পদ 

বোটানিক্যাল গার্ডেন সৃষ্টি করা হয়েছে এই বিদ্যালয়ে। শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বোচ্চ রকমের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়। বর্তমানে ২০৭জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে 

এবং ১৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা কে নিয়ে চলছে বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান রবি চৌধুরী, প্রিন্সিপাল পূরবী  চৌধুরী ১৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকার মানবিক ও আন্তরিক প্রচেষ্টা বিদ্যালয়কে এনে দিয়েছে তার সাফল্য। সরকারী সাহায্য না থাকলেও একাগ্রতা ও কিছু 

করার তাগিদ কে সঙ্গে নিয়ে এই গরীব এলাকার ৪০ জনের মতো ছাত্রছাত্রীকে প্রতিবছর বিনামূল্যে শিক্ষাপ্রদান করে থাকে বিদ্যালয়। যা আরেকটি মানবিক মুখ। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক মান উন্নয়নের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের বিশেষত 

মহিলাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আত্মনির্ভর হতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তার জন্য রয়েছে skill development এর ব্যবস্থা ।পশ্চিম হাওয়াই বাড়ি এলাকায় এ বিদ্যালয় সত্যি পথ দেখাচ্ছে তাদের, যারা 

কিছু করতে চায়। তিল তিল করে গড়ে তোলা এই বিদ্যালয় এর কর্তৃপক্ষ সারাদিন বিদ্যালয়ের উন্নতিকল্পে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। উনারা দেখিয়ে দিয়েছেন মনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও কিছু করার 

মানসিকতা থাকলে শত বাধা-বিপত্তি কে পেছনে ফেলে সাফল্যের জয়গান সম্ভব।এ বিদ্যালয় থেকে তৈরি ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনের পথ দেখাবে তেলিয়ামুড়া কে এই রাজ্য কে।  শিক্ষাই পারে অন্ধকারের 

গ্লানি থেকে আলোর পথে উদ্ভাসিত করতে। এই জি নেক্সট মডেল স্কুল তার একটি প্রকৃত উদাহরণ বলা চলে। আগামী দিনগুলিতে এ বিদ্যালয় তার গৌরবোজ্জ্বল গাঁথা নিয়ে আরো এগিয়ে যাবে পৌঁছাবে তার সর্বোচ্চ সাফল্যে এই আশা সকলের।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu