গভীর রাতে ফরেস্ট কর্মীগনের উপর যৌথভাবে প্রাণঘাতী হামলা ও ছিন্তাই কার্য - Sabuj Tripura News

সবুজ ত্রিপুরা
৪ জুন
শুক্রবার

পানিসাগর প্রতিনিধি:- ঘটনা উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগর মহাকুমার অন্তর্গত জুরি, আরএফভিট অফিসে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে গতকাল রাত আনুমানিক তিন ঘটিকায় অফিস ইনচার্জ প্রদীপ কুমার সরকার, অফিস কমপ্লেক্স এর ভেতরে সন্দেহমূলক আওয়াজ শুনতে পেয়ে সহকর্মীদের নিয়ে ঘরের বাইরে আসলে দেখতে পান যে দুজন লোক কমপ্লেক্স থেকে দেওয়ালের উপর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। 

সাথে সাথেই ফরেস্ট কর্মীগণ চোর সন্দেহে লোক দুটির পেছনে ধাওয়া করেন এবং পার্শ্ববর্তী রৌয়া এলাকার মৃত আব্দুল করিমের ছেলে ইয়াস উদ্দিন কে ধরতে সচেষ্ট হন। ফরেস্ট বিভাগের কর্মীদের দ্বারা আটক ক্রীত ইয়াস উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বনকর্মীগণ কমপ্লেক্সের মেইন গেইটে অধিক লোকের একসাথে চিৎকার-চেচামেচি লক্ষ্য করেন। 

কর্তব্যরত ইনচার্জ মেন গেটে এসে লোকগুলোর সাথে কথা বলতে চাইলে, উত্তপ্তরত লোকগুলি বলে ইয়াস উদ্দিন নামে যাকে আটক করে রাখা হয়েছে তাকে এক্ষুনি ছেড়ে দিতে হবে, এবং বনকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ইট পাথর ছুড়ে মারতে শুরু করে। বনকর্মীরা সংখ্যায় কম থাকায় কর্তব্যরত কর্মীগণ মেইন গেইট থেকে পিছু হটতে বাধ্য হন। ততক্ষণে উত্তপ্ত প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন আক্রমণকারী কমপ্লেক্স এর মেইন গেইট ভেঙ্গে কমপ্লেক্সের ভেতর প্রবেশ করে বনর্মীদের উপর আক্রমণ চালায়। 

তাতে কর্তব্যরত ইনচার্জ প্রদীপ কুমার সরকার সহ ফরেস্ট গার্ড বিশ্বজিৎ দাস ও উত্তম সরকার গুরুতর আহত হন। আক্রমণকারীরা কমপ্লেক্স এর ভেতর একনায়কত্ব কায়েম করে, গুন্ডারাজ চালিয়ে কমপ্লেক্সে সিজ করে রাখা গাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালায় এবং পরিবেশ এতই উত্তপ্ত হয় যে চোরা কারবারি মাফিয়া গুন্ডাবাহিনীরা একটা সময়ে বনদপ্তর এর অস্ত্রাগারের তালা ভাঙতে উদ্যত হয়। সেই সময় কর্তব্যরত কর্মীগণ নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে প্রতিবাদ করতে গেলে কর্তব্যরত ইনচার্জ প্রদীপ কুমার সরকারের মোবাইলটি আক্রমণকারীরা ছিনিয়ে নেয়। 

আক্রমণকারীরা বনকর্মীদের আহত করে আটক করে রাখা ইয়াস উদ্দিনকে সাথে করে নিয়ে কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যায়। যাবার সময় ফরেস্ট কর্মীদের এই এলাকা থেকে অন্যত্র বদলী হয়ে যেতে বলে এবং ফরেস্ট কর্মীগণকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়। আহত কর্মীগণ আক্রান্ত কারীদের মধ্যে থাকা বেশ কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন বলে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন। পরমুহূর্তে আহত বনকর্মীগণ জলাবাসা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করান এবং পার্শ্ববর্তী পানিসাগর থানায় খবর পাঠালে থানার কর্মীগণ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

খবর পাঠানো হয় উত্তর ত্রিপুরা জেলার ডিএফও মহাশয়কে। পানিসাগর মহকুমা তথা গোটা রাজ্যের মধ্যে এই ঘটনাকে বিরলতম ঘটনা বলে এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক মনে করেন। চোরাই কাঠ পাচার কারি মাফিয়া রাজ এতই শক্তিশালী হয়ে সমাজকে কলুষিত করছে এবং পরিবেশকে ধ্বংস করতে এতই ক্ষমতাসীন হয়ে, গোটা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলছে, তা ভাবলেই আতঙ্কিত হয়ে উটছেন এলাকার সাধারণ বসবাসকারি নাগরিকগণ। 

বনদপ্তর এর কর্মীগণের উপর চোরাকারবারি মাফিয়াদের দুঃসাহসী আক্রমণের কারণে গোটা এলাকায় আতঙ্কিত পরিবেশ বিরাজ করছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে পানিসাগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং প্রতিবাদ উঠছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu