পানিসাগরের গুলিকান্ডে পা হারিয়ে বিকলাঙ্গ হয়ে বাড়ি ফিরলেন হরেকৃষ্ণ দাস - Sabuj Tripura News

সবুজ ত্রিপুরা 
২১ ডিসেম্বর ২০২০  
সোমবার

ধর্মনগর প্রতিনিধিঃ ব্রুশরণার্থীদের পুনর্বাসন এর বিরোধিতায় কাঞ্চনপুরের যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীদের উপর পানিসাগরের গুলি কাণ্ডে আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর বিকলাঙ্গ হয়ে বাড়ি ফিরলেন পানিসাগর এর বাসিন্দা হরে কৃষ্ণ দাস নামে এক যুবক। তার এই অবস্থা দেখে তার পরিবারের লোকজন সহ গোটা কাঞ্চনপুর মর্মাহত। প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন কাঞ্চনপুরের নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ ও মিজো কনভেনশনের যৌথ উদ্যোগে কাঞ্চনপুরে  লাগাতার বনধ চলছিল। এতে সরকারি কোনো হেলদোল না দেখে একটা  সময়  কাঞ্চনপুরের যৌথ আন্দোলন কমিটি পানিসাগরে এসে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধের সিদ্ধান্ত নেন।সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২১ নভেম্বর পানিসাগরের চামটিলা জাতীয় সড়ক অবরোধের উদ্দেশ্যে পানিসাগর ঢোকার সময় অগ্নিপাশা এলাকায় পুলিশ কাঞ্চনপুরের আন্দোলনকারীদের পথ আটকে দেন। 


কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশের বাধা কে তোয়াক্কা না করে অবরোধ স্থলের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। একটা সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করেন। নিক্ষেপ করা হয় টিঅার গ্যাস পাশাপাশি আচমকা পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শ্রীকান্ত দাস নামে কাঞ্চনপুরের এক আন্দোলনকারীর এবং পুলিশের গুলিতে আহত হয় বেশ কয়েকজন। আহতদের মধ্যে হরে কৃষ্ণ দাস নামের এক আন্দোলনকারির পায়ে পরপর দুটি গুলি লাগায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কলকাতা পাঠানো হয়। 


কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে  তার পায়ে  পরপর দুটি গুলি লাগায় ক্ষতবিক্ষত পায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় বাধ্য হয়ে উনার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার সুস্থ হয়ে বিকলাঙ্গ অবস্থায়  বাড়ি ফিরলেন হরে কৃষ্ণ দাস নামের ঐ যুবক। বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেনে চেপে পানিসাগর স্টেশনে আসে সে। ট্রেন থেকে হরে কৃষ্ণ দাস নামতেই কাঞ্চনপুর ও পানিসাগর এর অসংখ্য লোক রেলষ্টেশন চত্বরেই তাকে অভিবাদন জানান।অন্যান্য আন্দোলনকারীরা তার হাতে পুষ্পস্তবক ও ফুলের মালা দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। পানিসাগর রেলস্টেশন থেকে বাইক ও গাড়ির রেলির মধ্য দিয়ে তাকে কাঞ্চনপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে রওনা দেওয়া  হয়। পানিসাগর থেকে কাঞ্চনপুরের এই দীর্ঘ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বহু জনগণ ফিরে আসা আন্দোলনকারী হরেকৃষ্ণ দাস কে পুষ্পস্তবক ও ফল দিয়ে অভিবাদন জানান। 


রেলির মাধ্যমে হরেকৃষ্ণ দাসকে কাঞ্চনপুরের নিজ বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।তাকে দেখতে তার বাড়িতে কাঞ্চনপুরের অসংখ্য জনগণ ভিড় জমান। যৌথ আন্দোলন কমিটির তরফ থেকে সরকারের কাছে তার যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরির ও আর্থিক অনুদান দাবি করা হয়। পাশাপাশি সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন পর্যন্ত তার সব রকমের চিকিৎসার ব্যয় ভার সরকার গ্রহণ করলেও সরকার যেন আগামী দিন তার চলাচলের জন্য একটি কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দেন। নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চের নেতৃত্বরা জানিয়েছে অতিসত্বর যেন উচ্চ আদালতের কোন বিচারকের মাধ্যমে সরকার পানিসাগরের গুলিকান্ডে  জড়িতদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ  করেন। অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu