দমকল গাড়ির অভাবে চরম ভোগান্তির শিকার পথ দুর্ঘটনায় আহতদের - Sabuj Tripura News

সবুজ ত্রিপুরা
০৪ ডিসেম্বর ২০২০  
শুক্রবার

চুরাইবাড়ি প্রতিনিধিঃ প্রেমতলা দমকল অফিসে চলছে চরম অরাজকতা। পথ দূর্ঘটনা হলে গাড়ির জন্য হাত-পা কাঁপছে ফায়ার কর্মীদের। ভোগান্তির শিকার দুটি বিধানসভার স্থানীয় জনগণ। উত্তর জেলার ত্রিপুরা অসম সীমান্তঘেঁষা কুর্তি কদমতলা ও বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি মাত্র ফায়ার স্টেশন রয়েছে সেটি হল প্রেমতলা ফায়ার স্টেশন। এই ফায়ার স্টেশনটি জন্মলগ্ন থেকে অদৃশ্য কারণে নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিগত বাম জমানা থেকে কিছু বাম মার্গীয় ফায়ার অফিসারদের জন্য এই ফায়ার স্টেশনটি চরম অরাজকতার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে, যা বর্তমানে বিদ্যমান। রাজ্যে পালাবদলের পরও কিছু বাম মার্গীয় দমকল দপ্তরের অফিসারদের জন্য প্রেমতলা ফায়ার স্টেশন একপ্রকার ভুতের বাংলায় পরিণত হয়েছে। আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে দুটি বিধানসভার স্থানীয় জনগণকে। 


আরও পড়ুনঃ সিপাহী জলা জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর উন্নত গোধন প্রকল্পের উদ্বোধন

মূলত দমকল দপ্তরের কাজ আগুন লাগা, পথ দুর্ঘটনা অথবা আপৎকালীন জরুরী পরিষেবা জন্য। সেই অর্থে প্রেমতলা ফায়ার স্টেশন ফায়ার কলের জন্য বড় একটি গাড়ি এবং পথদুর্ঘটনায় জন্য ছোট একটি গাড়ির বরাত পায়। কিন্তু মাসের অধিকাংশ সময়ে পথদুর্ঘটনায় জন্য ব্যবহৃত ছোট গাড়িটি প্রেমতলা দমকল অফিসে দেখা যায় না। আর তাতে পথদুর্ঘটনা সংঘটিত হলে খেসারত দিতে হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত আহত ব্যক্তি ও নিচু স্তরের ফায়ার কর্মীদের। আর তাতে দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তির গাড়ির জন্য যেকোন মুহূর্তে মৃত্যুও ঘটতে পারে। ইদানিংকালে প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনের পথদুর্ঘটনায় ব্যবহৃত ছোট গাড়িটি স্টেশনে নেই। শুধু ফায়ার কলের জন্য ব্যবহৃত বড় একটি গাড়ি দিয়ে দমকল দপ্তরের আধিকারিকরা কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।  


মূলত উত্তরের দমকল দপ্তরের আধিকারিকরা মানুষের সেবায় যে অশ্বডিম্ব প্রসব করছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা আজকের একটি ছোট পথ দুর্ঘটনার পর থেকে। আজ সকালবেলা কদমতলা থানাধীন ত্রিপুরা অসম সীমান্তের ঝেরঝেরিতে ঘটে এক পথ দূর্ঘটনা। সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাঘন ঝেরঝেরি এলাকায় পথ দুর্ঘটনার শিকার হন আলিম উদ্দিন নামের এক যুবক। জানা যায় ,বাঘনের ঝেরঝেরি এলাকায় পাথর ভাঙার ক্রেশার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতেন ঐ এলাকার যুবক আলিম উদ্দিন। প্রতিদিনের ন্যায় আজও বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাই-সাইকেলে চেপে ক্রেশার ইন্ডাস্ট্রিতে যাওয়ার পথে অপরদিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি পালসার মোটরবাইক আলিমুদ্দিনকে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলে মোটর বাইক চালক মনজুর হোসেন (২০) সহ আলিম উদ্দিন (৩০)গুরুতর আহত হয়। খবর দেওয়া হয় প্রেমতলা দমকল অফিসে। 


ঘটনাস্থলে দমকল কর্মীরা উপস্থিত হয়ে আহত দু'জনকে কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বর্তমানে উভয়েই কদমতলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু সাধারন জনগনের অভিযোগ, প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহত দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেকটা সময় লেগেছে। যদি দমকল অফিসের ছোট গাড়ি থাকতো তাহলে গ্রামাঞ্চলের ছোট রাস্তা দিয়ে অনায়াসে আরো আগে আহত দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারতেন। সুতরাং কেন দমকলকর্মীরা ছোট গাড়িটি নিয়ে আসেননি তানিয়েও প্রশ্ন তুলেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা।স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, দমকল দপ্তরের বামমার্গীয় এক আধিকারিক প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনের ছোট গাড়িটি উনার ব্যক্তিগত কাজের জন্য নিয়ে গিয়ে কমলপুর এলাকায় এক্সিডেন্ট করেছেন। এ বিষয়ে প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনের এক দমকল কর্মীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, উনাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ, কুন্তল দেববর্মা অফিসিয়াল কাজের জন্য গাড়িটি প্রেমতলা ফায়ার স্টেশন থেকে নিয়ে গেছেন। এর বেশি উনাদের জানা নেই বলে দমকলকর্মী জানান। দমকলকর্মী আরো জানান,বড় গাড়ি দিয়ে আহতদের আনতে কিছুটা সময় লেগেছে কারণ গ্রামের ছোট রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি যাতায়াত করতে অনেকটা অসুবিধা হয়। তাই ছোট গাড়ি হলে আরো আগে এবং আহত রোগীকে অনায়াসে হাসপাতালে নিয়ে আসা যেতো।এখন দেখার বিষয় প্রেমতলা ফায়ার স্টেশনের দিকে দমকল অফিসারের দ্বিচারিতা মনোভাবের কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu