মিজোরামের ব্রো রিয়াং শরণার্থী পুনর্বাসন নিয়ে উত্তরে প্রতিবাদ তুঙ্গে - Sabuj Tripura News

সবুজ ত্রিপুরা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
শুক্রবার 

চুরাইবাড়ি প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন থেকে উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর মহাকুমায় ৫১০০ শরণার্থী পরিবারের পুনর্বাসন নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা। কিন্তু বিগত জুলাই মাসে রাজ্য সরকার কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগর মহকুমায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানায় কাঞ্চনপুরের জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা এবং স্থানীয় নাগরিকরা। তা নিয়ে ১২ ঘণ্টা কাঞ্চনপুর মহকুমা বন্ধ কর্মসূচি পালন করা হয় কাঞ্চনপুর জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটির উদ্যোগে। স্থানীয় সংস্থা ও জনগণের দাবি, রাজ্যের ৮ টি জেলাতে সমানভাবে ব্রো রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক। 


এ মর্মে উত্তর জেলার ধর্মনগর মহকুমাধীন লক্ষীনগরের মিশ্র স্থানীয় জনগণ গত ৯ জুলাই জেলাশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগে বলেন, লক্ষীনগর, চাঁদপুর মৌজার ফরেস্ট ল্যান্ডের কাটোয়াছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন যাতে দেওয়া না হয়। কিন্তু গতকাল সকালবেলা লক্ষীনগর,চাঁদপুর মৌজার কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম এলাকার ফরেস্ট ল্যান্ডে রিয়াং ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ৩ জনের সার্ভের একটি টিম আসে। সার্ভের টিমকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় মিশ্র সম্প্রদায়ের জনগণ সার্ভের টিমকে ঐ এলাকায় সার্ভে করতে বাধা প্রদান করেন। তাছাড়া স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম মনিপুরী দেববর্মা রাংলং সহ সকল সম্প্রদায়ের মিশ্র জনগণ ৮ নং জাতীয় সড়কের পাশে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। 


তাদের একটাই দাবি কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন কোন ভাবে দেওয়া চলবে না। অবশেষে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধর্মনগর মহকুমার অতিরিক্ত মহকুমা শাসক সূর্যকুমার দেববর্মা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় জনগণকে আশ্বস্ত করেন, যে ঐ এলাকায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন ইতিমধ্যে হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের নির্দেশে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফরেস্ট ল্যান্ড আছে কিনা তা চিহ্নিত করার জন্যই এই সার্ভে।

অতিরিক্ত মহকুমা আধিকারিক স্থানীয় জনগণকে আরো বললেন যে, উনাদের দাবি-দাওয়া গুলি লিখিত ভাবে জেলা শাসকের কাছে একটি ডেপুটেশন আকারে প্রদান করার জন্য। উনার আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে স্থানীয় প্রতিবাদকারীরা উনাদের প্রতিবাদ প্রত্যাহার করেন। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, লক্ষী নগর, চাঁদপুর মৌজার অন্তর্গত চুরাইবাড়ি ফরেস্ট বিটের আওতাধীন কাটোয়া ছড়া ও মইজুরাম পাড়ায় মিজোরাম ব্রো শরণার্থীদের কোনভাবে পুনর্বাসন উনারা মেনে নেবেন না। 


প্রয়োজনে ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে অমরণ প্রতিবাদ করবেন। উনাদের দাবি যুগ যুগ থেকে ঐ এলাকার ফরেস্ট ল্যান্ডে জুম চাষ করে উনারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। জুম চাষই তাদের একমাত্র সম্বল। তাছাড়া স্থানীয় জনগণ দখলকৃত সরকারি ফরেস্ট ল্যান্ডে নিজের নামে পাট্টা পেয়েছেন। অনেকে আবার পাট্টা পাওয়ার আবেদনও জমা করেছেন। সোর্স মারফত স্থানীয়রা জানতে পেরেছেন উত্তর জেলার ৭ টি জায়গাতে ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তারমধ্যে কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় ১ হাজার ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। আর তারই প্রতিবাদে স্থানীয়রা আজ প্রতিবাদ সাব্যস্ত করে। এখন দেখার বিষয় উত্তর জেলার জেলাশাসক কাটোয়া ছড়া ও মইজুরাম পাড়ায় মিজোরাম ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে কি ভূমিকা পালন করেন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu