সবুজ ত্রিপুরা
২১ জুলাই ২০২০
মঙ্গলবার
চুরাইবাড়ি প্রতিনিধিঃ পার্শ্ববর্তী রাজ্য অসমের করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি থানাধীন ভূবরিঘাট বাগানে প্রবেশ করে গরু চুরি করতে গিয়ে গ্রামবাসীর গণপ্রহারে মৃত্যু হল তিন বাংলাদেশি চোরের। এই মুহূর্তে এদের নাম জানা না গেলেও ওদের প্রত্যেকের বয়স ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছরের মধ্যে হবে বলে জানা গেছে। রবিবার সকালে পুলিশ তদন্তে নেমে মৃতদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তর তথ্য আদায়ে সক্ষম না হলেও ওদের বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটের জুরি উপজেলার জামকান্দিতে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করা হচ্ছে।
উক্ত ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য বিরাজ করছে স্থানীয় এলাকায় এবং মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে অকুস্থলে উপস্থিত হয়ে জোর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বর্ডার এসপি প্রশান্ত দত্ত সহ সদর ডিএসপি শুধন্য শুক্লবৈদ্য ও পাথারকান্দি থানার ওসি তানবির আহমেদ। জানা গেছে শনিবার গভীর রাতে একদল চোর পাথারকান্দির ভূরবিঘাট বাগানের ১০ নং ওয়ার্ডের তেলেঙ্গাবস্তির রাজু তেলেঙ্গা নামের এক কৃষকের বাড়িতে প্রবেশ করে গরু চুরি করতে প্রচেষ্টা করে।
কিন্তু সে সময় রাজু বাবুর সন্তানরা প্রকৃতির ডাকে বাহিরে ছিল এবং তারা সাত আটজন লোককে রাতের অন্ধকারে চলাফেরা করতে দেখে হাল্লা চিৎকার করলে চোরেরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তার পর মুহূর্তে চোরের দলটি বস্তির নারায়ণ তেলেঙ্গা নামের অপর এক কৃষকের গোয়াল ঘরে প্রবেশ করতেই জেগে যান পরিবারের লোকেরা এবং তাদের হাল্লা চিৎকারে চোরের দল সেখান থেকেও পালিয়ে গিয়ে পাশের পাহাড়ি ছড়া ও জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। ততক্ষনে ভিডিপি কর্মীদের তৎপরতায় পুরো বাগানের জনগন এগিয়ে এসে চোরদের খুজতে শুরু করেন।
তবে ভোর চারটে নাগাদ এদের মধ্যে তিন গরু চোর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে জনবসতি স্থানে আসতে দেখে গ্রামবাসীরা এদের পাকড়াও করার চেষ্টা করেন। কিন্তু গরু চোররা তখন গ্রামবাসীদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে হাতে থাকা বেশকিছু ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে জনগনকে ঘায়েল করার প্রচেষ্টা চালায় এবং পরে শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। এতে গ্রামবাসীদের গণপ্রহারে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন বাংলাদেশি গরু চোরের। তবে ওদের বাকি সাঙ্গ পাঙ্গরা ভোর হবার আগেই রাতের অন্ধকারে সীমান্ত এলাকার কালভার্টের সুড়ঙ্গ পথে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে জানা গেছে।
তাছাড়া বলা যায় সামনে কুরবানী ঈদ তাই এ সময়ে বাংলাদেশে গরুর বাজার চাঙ্গা তাই এই সুযোগে সীমান্ত এলাকায় গরু চুরি ও পাচার কান্ড মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার এস কৃষ্ণা সীমান্ত এলাকার কিছু এলাকা পরিদর্শন করে জনগনকে অভয় বার্তা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এসব ঘটনায় স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পাশাপাশি আগামি ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত মরদেহগুলো মর্গে রাখা হবে। ডিএসপি শুধন্য বাবু জানান যে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং একি সাথে সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিয়েও পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা চলছে।
0 মন্তব্যসমূহ