চুরাইবাড়ি প্রতিনিধিঃ ধারালো ছুরি দিয়ে শ্বাস নালি কেটে কিশোরীর রহস্যজনক আত্মঘাতীর প্রচেষ্টাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য বিরাজ করেছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য অসমের করিমগঞ্জের মুল্লাগঞ্জ এলাকায়। বাড়ি থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরত্বে মামার বাড়ি মুল্লাগঞ্জ বাজারের এক বস্ত্র প্রতিষ্টানের ট্রায়াল রোমের ভিতরে ধারালো ছুরি দিয়ে নিজের গলার শ্বাস নালি কেটে কিশোরীটি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ কান্ডে অসম পুলিশ তদন্তে নেমে প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদের জন্য বস্ত্র বিপনির মালিক সহ আরেক ব্যবসায়িকে সাময়িক আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে রক্তাক্ত একটি ধারালো ছুরি সহ একটি ব্যাগ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ অসমের নিলামবাজার পুলিশ। জানা গেছে বুধবার দুপুর অনুমানিক পৌনে দু'টা নাগাদ নিলামবাজার থানা এলাকার মুল্লাগঞ্জ বাজারে থাকা আব্দুল হকের বস্ত্র প্রতিষ্টানের ট্রায়াল রোমেই ঘটনাটি সংঘটিত হয়। অন্যান্য গ্রাহকের সঙ্গে ওই কিশোরীও আব্দুল হকের বস্ত্র প্রতিষ্টানে গিয়ে নিজের জন্য জামা-কাপড় দেখা শুরু করে। এক পর্যায়ে তার পছন্দ হওয়া জামা গায়ে লাগিয়ে দেখার জন্য ট্রায়াল রুমে গিয়ে দীর্ঘ সময় পরও বের হয়নি।
এরই মধ্যে হঠাৎ গলার গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে দোকান মালিক ট্রায়াল রুমের দিকে লক্ষ করে দেখেন কিশোরীটি মেঝোতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তা দেখে তিনি চিৎকার দিলে উপস্থিত থাকা অন্যান্য গ্রাহক ও স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে রক্তলোলুপ কিশোরীটিকে উদ্ধার করে বাহিরের বেঞ্চের মধ্যে নিয়ে আসেন এবং শুরু হয় আহতের পরিচয় খোজাখুজি। মুহূর্তেই স্থানীয়রা জড়ো হয়ে রক্তাক্ত কিশোরীর পরিচয় নাম ঠিকানা জানতে চাইলে গলার খাদ্যনালী কাটা থাকায় সে কথা বলতে অক্ষম হওয়ায় তাকে দেওয়া হয় কাগজ-কলম। তখন সে কোন মতে তার নাম ও ফোন নম্বর লিখে দিলে শেষ পর্যন্ত পরিচয় পাওয়া যায় তার। জানাগেছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিজিম গ্ৰামের বাসিন্দা পেশায় স্কুল শিক্ষক ফুজাইল আহমেদ এর কন্যা সাজিদা আক্তার (১৬)।
ঘটনার পর খবর দেওয়া হয় নিলামবাজার পুলিশে। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক ভাবে রক্তাক্ত গলা কাঁটা কিশোরীকে উদ্ধার করে নিলামবাজার হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করেন।কিন্ত সেখানে গলার অপারেশনের ব্যবস্থা না থাকায় তাকে সেখান থেকে পাঠানো হয়েছে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।শেষ খবরে জানা গেছে বেশ সঙ্কটজনক অবস্থায় এসএমসিতে জীবন যুদ্ধ শুরু হয়েছে দশম শ্রেণীর অধ্যায়নরত গান্ধাই হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্রী সাজিদা আক্তারের।
এদিকে নিলামবাজার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো চুরি ও একটি স্কুল বেগ বাজেয়াপ্ত করেছে এবং বস্ত্র প্রতিষ্টানের মালিক আব্দুল হক সহ একই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আব্দুস সুফান নামের আরেক ব্যবসায়ীকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য সাময়িক আটক করেছে। এ ঘটনার নেপথ্যে প্রেম জনিত কারন রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একি সাথে দোকানের ভিতর কিশোরীটিকে অন্য কেহ আক্রমন করেছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চাঞ্চল্য সহ নানা প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ