সবুজ ত্রিপুরা
৩১ জুলাই ২০২০
শুক্রবার
ধর্মনগর প্রতিনিধিঃশুক্রবার সকালে রাজ্যে উচ্চ-মাধ্যমিকের ফল বেড়োতেই ধর্মনগরে বেশ খুশি হাওয়া নজরে এলো। ধর্মনগরের তিনটি বিদ্যালয়ের তিন কৃতি ছাত্র ছাত্রীর সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীরা।
এই ৩ কৃতিদের মধ্যে একজন হলো বিজ্ঞান বিভাগে ৭ম স্থান অধিকারী শিবরাজ দেব। পিতা সজল দেব ও মাতা বকুল দেব।সে ধর্মনগর বীর বিক্রম ইনস্টিটিউশনের ছাত্র । তার বাড়ি পেঁচারথলের মাছমারা এলাকায় । মাছমারার ক্ষিরোদ ত্রিপুরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে এসে সে ধর্মনগরের বীরবিক্রম ইনস্টিটিউশন একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল। প্রত্যহ সে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পড়াশুনা করতো। পড়াশুনার সাথে তার বিভিন্ন রকম খেলাধুলার আগ্রহ রয়েছে। আগামীতে সে ইসরোর বৈজ্ঞানিক হতে চায়।কারণ আকাশ চর্চা তাঁর খুব প্রিয়। শিবরাজের এই সাফল্যে ধর্মনগরের সাথে সাথে মাছমারার প্রত্যন্ত গ্রামের জনগন খুবই আনন্দিত। অতি সাধারন একজন দর্জির ছেলের এমন সাফল্য সত্যি প্রশংসনীয়।
অপর আরেকজন কৃতি ছাত্র তন্ময় নাথ। বাড়ি ধর্মনগর রাজবাড়ী মন্ডপপাড়া এলাকায়। গোল্ডেন ভ্যালি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র। সে এবার বিজ্ঞান বিভাগে গোটা রাজ্যের মধ্যে ৯ম স্থান দখল করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৫২। পিতা তাপস নাথ ও মাতা গায়ত্রী নাথ। পিতা একজন অতি সাধারণ ব্যবসায়ী। খুব সাধারণ পরিবারে থেকেই তার পড়াশুনা। তন্ময় জানিয়েছে সে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ ঘন্টা পড়াশুনা করতো।গৃহশিক্ষক ছিলেন ৪ জন। পড়াশুনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলা ,গান শোনা, বইপড়ায় তার বেশ আগ্রহ ছিল। পাশাপাশি সমাজ সেবায় তন্ময় বেশ উৎসাহি। লকডাউনের মূহুর্তে যখন রাস্তার কুকুরেরা অনাহারে ছিল তখন তন্ময় ও তার কিছু সহপাঠীরা মিলে রাস্তার কুকুরদের খাওয়ার দান করেছেন।ভবিষ্যতেও সমাজসেবাই হবে তার মূল লক্ষ্য এটাও জানায় সে। বর্তমানের ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে দাড়িয়ে তাঁর আগামীর চিন্তা আমাদের অবাক করেছে। তন্ময় জানিয়েছে সে আগামীতে ফিজিক্স নিয়ে পড়তে চায়। তার মূল উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে সে অধ্যাপক হতে চায়। তার মূল হিসেবে সে জানায়। অতি সাধারন পরিবার থেকে পড়তে গিয়ে সে লক্ষ্য করেছে। বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী আছে যারা অর্থের অভাবে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহন থেকে বিরত থাকে। ফলে সে চায় অধ্যাপক হয়ে আর্থিক ভাবে দূর্বল মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে। তার এই মহান চিন্তাধারায় সকলেই মুগ্ধ।
বিজ্ঞান বিভাগের ১০ ম স্থান অধিকারীনি আরেক ছাত্রী দেবার্চনা ভট্টাচার্য । সে ধর্মনগর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ।পিতা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মা সুব্রতা ভট্টাচার্য । বাড়ি ধর্মনগরের শরৎ পল্লী এলাকায় । তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৫১। সে প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা পড়াশুনা করতো। অবশিষ্ট সময়ে চলতো নাচ গান ও ছবি আকা-আকি। গৃহশিক্ষক ছিল মোট ৫ জন। তার এই সফলতার পেছনে গৃহশিক্ষকদের সাথে সাথে মা-বাবার কৃতিত্ব রয়েছে অনেকাংশে।সারাদিন পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় কাটানোর পর গভীররাতেই ছিলো তার পড়াশুনার প্রিয় সময়। আগামীতে সে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
0 মন্তব্যসমূহ