পারিবারিক কলহে আত্নঘাতী গৃহবধূ ! স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুধে হত্যা অভিযোগ আনলেন মৃতার পিতা



সবুজ ত্রিপুরা, পানিসাগর প্রতিনিধি, ৭মে : উওর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগর মহকুমার অন্তর্গত পূর্ব রৌয়া গ্রাম পঞ্চায়েত, শিমুল টিলা ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রঞ্জন মালাকারের দ্বিতীয় পুত্র রিপন মালাকারের স্ত্রী রিম্পি পাল মালাকার (২২) গত ৫মে মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটায় নিজ বসত ঘরে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেন । 
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ২০১৬ সনে, আসামের করিমগঞ্জ জিলার মাইজগ্রাম ওয়ার্ড নাম্বার ৫ এর বাসিন্দার রসেন্দ্র পালের কন্যা রিম্পিকে বাড়ির থেকে পালিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রিপন মালাকার। পরবর্তী সময়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে স্বামী রিপন মালাকার এর বাড়িতে রিম্পি স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। বিগত চার বছর বৈবাহিক  সময়ে  দু বছর বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । পারিবারিক ছোটখাটো ঝগড়াঝাটি ছাড়া তেমন কোনো অশান্তি তাদের মধ্যে ছিল না। কিন্তু আজ সকালবেলা রিপন মালাকার এর স্ত্রী ও বড় ভাই স্বপন মালাকার এর মধ্যে  সামান্য ঝগড়াঝাটি হয় । তারপর স্বামী রিপন প্রতিদিনের মতন কাজে চলে যায় এবং তার বক্তব্য থেকে জানা যায় বেলা ১ ঘটিকায় কাজ থেকে ফিরে এসে স্নান করে ঘরে ঢুকে স্ত্রীকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় । 


সাথে সাথেই পানিসাগর থানায় খবর পাঠানো হয় এবং শ্বশুরবাড়িতে খবর পাঠানো হলে লকডাউন এর কারণে ঘটনার দিনে কেউ উপস্থিত হতে পারেননি । কিন্তু স্ত্রীর মেসো এবং পানিসাগর থানায় কর্তব্যরত কর্মীদের সাথে মৃতের বাড়িতে উপস্থিত হলে মৃত রিম্পি পালকে ঘরের ভেতর বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান । তাতে উপস্থিত সবার সন্দেহের সৃষ্টি হয় । পর মুহূর্তে পানিসাগর থানার পুলিশ কর্মীদের তত্ত্বাবধানে মৃতদেহটি পানিসাগর মহকুমা হাসপাতালে পোস্টমর্টেম  করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় । 

পরদিন ৬মে বুধবার মৃত রিম্পি পোস্টমর্টেম চলাকালীন সময়ে পানিসাগর হাসপাতাল তাহার পিতা মাতারা উপস্থিত হন। পর মুহূর্তে মৃত  রিম্পি পালের  মাতা পিতা সংবাদ প্রতিনিধির কাছে জানান যে, তাদের মেয়ে রিম্পি পাল মালাকার বিগত ২০১৬ সনে  ভালোবেসে বিবাহ করেছিল রিপন মালাকারকে। 


কিন্তু  বিবাহের কিছুদিন পর থেকেই মেয়ে রিম্পি উপর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতন হতে থাকে এবং ২০১৮ সনে মেয়ের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় মৃতার পিতা মেয়ের শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদ আনলে, পানিসাগর বিজেপি মন্ডল সদস্যদের উপস্থিতিতে এবং স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মৃত রিম্পি স্বামীসহ ভাসুর,  শ্বশুর এবং অন্যান্য সদস্যদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতন বিন্দুমাত্র কমেনি। তারই ফলশ্রুতিতে আজ তাদের মেয়েকে পরিবারের সদস্যরা মিলে হত্যা করেছেন বলে পিতা রসেন্দ্র রুদ্র পাল অভিযোগ আনেন। তাই রিম্পির  স্বামী রিপন মালাকার, ভাসুর স্বপন  মালাকার, শশুর রঞ্জন মালাকার, এবং দিদি শাশুড়ির বিরুদ্ধে রিম্পি পাল মালাকার এর হত্যাকারী অভিযুক্ত করে পানিসাগর থানায় একটি লিখিত FIR করেন । 

এমতাবস্থায়, রিম্পি পালের মৃত্যুর কারণ জানতে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এর অপেক্ষায় পানিসাগর পুলিশ প্রশাসন সহ গোটা  এলাকাবাসী। গৃহবধূর রিম্পি পালের মৃত্যুতে বিস্তর এলাকায় বর্তমানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu