বক্সনগরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় সর্বস্বান্ত এক পরিবার-Sabuj Tripura


 সবুজ ত্রিপুরা 

২৯ ডিসেম্বর

 বুধবার

বক্সনগর প্রতিনিধিঃ প্রকাশ্য দিবালোকে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল কলমচৌড়া থানাধীন বক্সনগর রহিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নং ওয়ার্ডের গৌরাঙালা মিজান মিয়ার বসত ঘরটি।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ২ ঘটিকার সময়।এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।বাড়ির মালিক মিজান মিয়া জানিয়েছেন  অগ্নিকাণ্ডে তার মোট ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।ঘটনার বিবরণে জানা গেছে মিজান মিয়ার স্ত্রী নাসিমা খাতুন ঘরে তালা ঝুলিয়ে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তার নিজের চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন।আর তার স্বামী মিজান মিয়া একটি গরু নিয়ে বনের মধ্যে জান।বাকি সদস্যরা অর্থাৎ তাদের তিন সন্তান  স্কুলে ছিলেন। মিজান মিয়া ও তার স্ত্রী বাড়ি থেকে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে 

দাউ দাউ করে ঘরের টিনের বেড়ায়  আগুন লেগে যায়।খুব দ্রুত আগুন লেগে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সারা ঘরে।ঘরের আসবাব পত্রের সাথে পুড়ে গেছে তিন লক্ষ টাকা। সর্বমোট ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই দিন। এই ঘটনাটি এলাকাবাসী প্রত্যক্ষ করার পর প্রথমেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন।তবে তারা পুরোপুরি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি।পরে আগুন আরো আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসী বিশালগড় ও সোনামুড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন করে ঘটনাটি জানায়।প্রায় দুই ঘণ্টার পর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এর কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে। অগ্নিনির্বাপক দফতরের কর্মীরা আসার আগেই সব কিছু পুড়ে শেষ হয়ে যায়।ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান বক্সনগর থেকে বিশালগড়ের দূরত্ব ও রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে তাদের আসতে দেরি হয়েছে।তবে এলাকাবাসীরা জানান বক্সনগর থেকে সোনামুড়ার দূরত্ব ২২ কিলোমিটার।অপরদিকে বিশালগড় থেকে বক্সনগর এর দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার।দু'টি জায়গাতেই ফায়ার স্টেশন রয়েছে।বক্সনগর এলাকায় যদি কোন অগ্নিকান্ডের ঘটনা 
ঘটে তাহলে দূর থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আসতে অনেকটা সময় লেগে যায়।মিজান মিয়ার বাড়ির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরো একবার স্পষ্ট করল যে বক্সনগরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকা একান্ত প্রয়োজন তা না হলে এ ধরনের বিপত্তি থেকে লোকজনকে রক্ষা করা খুবই মুস্কিল হয়ে পড়বে।তবে মিজান মিয়ার ঘরে আগুন লাগার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে,তা অনেকেরই সন্দেহ।অনেকেরই ধারণা মিজান মিয়ার সাথে কোনো শত্রুতার জেরেই ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।তবে তা কতটা সত্য তা যাচাই করবে পুলিশ।সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে আজ মিজান মিয়ার পরিবার রাস্তায়।তাদের এই একটি মাত্রই বসতঘর ছিল।মিজান মিয়া একজন কৃষক ছিলেন।তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে।আগুন লেগে তার ছেলে বিদেশে যাওয়ার জন্য নগদ তিন লক্ষ টাকা ঘরের মধ্যেই মজুদ ছিল।ছেলের আর বিদেশে যাওয়া হলো না।অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ছিল তিন লক্ষ টাকা, তিনটি বক্স খাট, সুফা, কাপড়চোপড় সহ মূল্যবান কাগজপত্র ও বিদেশে যাওয়ার পাসপোর্ট।সরকার যদি তাদের সাহায্য হাত না বাড়িয়ে দেয় তাহলে তারা একেবারেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বে।গত কয়েকদিন আগে রাজ্যের কয়েকটি স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল সহ পত্রপত্রিকায় বক্সনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্য খবর প্রকাশিত হয়। এই খবরের দুদিন রেস্ কাটতে না কাটতেই আজ এই এমন ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে গেল।এইভাবে এই গত এক বছরে বক্সনগর সর্বমোট পাঁচটি বসতবাড়ি সহ কয়েকটি যান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।এখন দেখার বিষয় কবে নাগাদ বক্সনগর এর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu