অবৈধ কাগজপত্র করে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে-Sabuj Tripura

 

সবুজ ত্রিপুরা 

০২ ডিসেম্বর

বৃহস্পতিবার

বক্সনগর প্রতিনিধিঃ জানাযায়  সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া মহকুমার আড়ালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ছামিনা বিবি (৯৪) স্বামী মৃতঃ আনু মিয়া বিগত ০১/১২/১৯৯০ ইং তারিখে পরলোক গমন করেন । 

বিবাহের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও সামিনা বিবি এবং আনু মিয়ার  কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ না করায় স্বামী আনু মিয়া পরলোক গমন করার পর স্ত্রী ছামিনা বিবি স্বামীর স্ত্রী হিসেবে একমাত্র উত্তরাধিকারী বটে। যার ফলে স্বামীর জীবদ্দশায় ভবিষ্যতে আমাদের উভয়ের বৃদ্ধাঅবস্থায় আমাকে দেখভাল ও আমাদের বিষয় সম্পত্তি রক্ষণা বেক্ষণ করার, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ওষুধ পথের ব্যবস্থা করা ও আমাদের সেবা-যত্ন করার জন্য আমার ভাইপো জুয়েলকে ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি এবং পালক পুত্র হিসেবে আমি আমার স্বামী তাকে স্বীকৃতি দেয় । 

                          হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার ও আমার স্বামীর সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য কতিপয় লোক ষড়যন্ত্র শুরু করেন । ২০১০ ইং সন হইতে ২০২১ ইং এপ্রিল পর্যন্ত আমি আড়ালিয়া আমার বাড়িতে একাকী বসবাস করিতেছি। ২০২০ এর নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে পরস্পরের মাধ্যমে আমি জানতে পারি আমার বসত বাড়ির পশ্চিম পাশের আমার ও আমার স্বামীর নামিও বাগান টিলা মো: ১.২৩ একর ভূমি বিবাদী আনোয়ার হোসেন তাহার নামে কাগজপত্র করে নেয়। মহিলা মুখ্য নিঃসন্তান বৃদ্ধা, মহিলা বাধ্যক্য জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হাঁটাচলা করা প্রায় অক্ষম । এই বিষয়টি সন্দেহ হয় যে বিবাদী আমার ও আমার স্বামীর ভূসম্পত্তি কাগজপত্রের কোন প্রকার গোলমাল করেছে কিনা। মহিলা লেখাপড়া জানেন না জায়গা জমির কাগজপত্র সম্পর্কেও কোন অভিজ্ঞতা নেই ।

তাই উক্ত বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বৃদ্ধা মহিলার কাকাতো ভাইপো ইমাম হোসেনকে বলেন। তখন ইমাম হোসেন সোনামুড়া মহকুমার ও থানাধীন রেভিনিউ সার্কেল সোনামুড়া, সোনামুড়া তহশীল, ও খেদা বাড়ি তহশীল গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে যে উল্লেখিত বিবাদীর পিতা হানিফ মিয়া জীবিত থাকা অবস্থায় বৃদ্ধা এবং  বৃদ্ধার স্বামীর সম্পত্তি আত্মসাৎ করার কুউদ্দেশ্যে বিবাদীর সহযোগিতায়  বিবাদীর পিতা হানিফ মিয়া গত০৮/১০/২০০৯ ইং  তারিখে  সোনামুড়া মহকুমা শাসক অফিস হইতে F.36(1)SDM/SNM/ GL/09/ মূলে একটিই জাল সারভাইবেল সার্টিফিকেট বাহির করিয়া নেয়। যাহাতে মৃত ব্যক্তির স্থলে বৃদ্ধার স্বামীর নাম আনু মিয়া এবং মৃত ব্যক্তির পিতা লাল মিয়া  মৃত্যুর তারিখ ০১/০৩/১৯৯০ ইং সারভাইবেল  সার্টিফিকেট ছামিনা বিবি মৃত ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক স্ত্রী ,হানিফ মিয়া মৃত ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক পুত্র ,জুয়েল হোসেন মৃত ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক পুত্র বলে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই খবর আমি জানতে পেরে সোনামুড়া কোর্টে তিনটি মামলা দায়ের করি। যাহাদের ক্রমিক নং TS 01/2021, Civil Misc 01/2021 Out of TS 01/2021। এদিকে আমার মামলার খবর জানতে পেরে বিবাদী আনোয়ার হোসেন আমার ও আমার স্বামীর আরো বহু সম্পত্তি আত্মসাৎ করার কুমতলবের ২০২১ ইং সনের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আনোয়ার হোসেন তার স্ত্রীকে দিয়ে অল্প দুধ ও কিছু ফল ফলাদি দিয়ে প্রায় দিন আমার বাড়িতে পাঠাতে থাকেন। এবং বদ উদ্দেশ্য নিয়ে আমাকে সেবা করতে থাকেন। তাহার এই কার্যকলাপে সন্দেহ হওয়াতেই বিবাদীর স্ত্রীকে বৃদ্ধার বাড়িতে আসার জন্য নিষেধ করে দেন। বিবাদী ও বিবাদীর স্ত্রী ছলনা বৃদ্ধা বুঝতে পারেন , বুঝতে পেরেও বৃদ্ধা কোন উপায় নেই কারণ বৃদ্ধা-বৃদ্ধার বাড়িতে একা থাকেন। অতিরিক্ত কিছু বললে বৃদ্ধাকে প্রাণে মেরে ফেলতে পারেন। জানা যায় ১৮/০৭/২০২১ ইং তারিখে বিবাদীর স্ত্রী বৃদ্ধার বাড়িতে ছিল। দুপুরবেলায় ভাত খাওয়ার পর বৃদ্ধার মুখের ভিতর পেটের মধ্যে জ্বালা যন্ত্রণা শুরু করেন ।  জ্বালা যন্ত্রনায় বৃদ্ধা সন্ধ্যাবেলায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন । তখন বৃদ্ধার ভাইপোয়েরা খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে সোনামুড়া হাসপাতলে ভর্তি করান । সোনামুড়া হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসার পর ডাক্তারবাবুরা মেলাঘর হাসপাতালে রেফার করেন । মেলাঘর হাসপাতালে 5 দিন চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য আগরতলা হাপানিয়া হাসপাতালে রেফার করে দেন । হাপানিয়া হাসপাতালে 9 দিন চিকিৎসা করানোর পর কিছুটা সুস্থ হলে উনাকে ছুটি দেন। তারপর বিশ্রামগঞ্জ এক ভাইয়ের বাড়িতে নয় দিন থাকার পর তার শরীরের কোনো পরিবর্তন না আসায় আগরতলা ভাড়া বাড়িতে থেকে ডক্টর গৌরব দাশগুপ্তের চিকিৎসাধীন ১১ দিন থাকার পর ছুটি নিয়া উনার কাকাতো ভাই ফজল হকের বাড়িতে অবস্থান করেন।  বর্তমানে বৃদ্ধা মহিলা শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন । এদিকে বৃদ্ধা ফজল হকের বাড়িতে এসে  জানতে পারেন দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বিবাদী আনোয়ার হোসেন ও তাহার বাই আক্তার হোসেন বৃদ্ধা ঘরের তালা ভেঙ্গে অবৈধভাবে বাড়িঘর দখল করে নেয়।  পরস্পরের নিকট জানতে পারেন বিবাদী নাকি এই বসতবাড়ির সব কাগজপত্র করে নিয়েছেন । কিছুতেই বাড়ি ছাড়বেন না । এমনকি  বৃদ্ধাকে মেরে তিন টুকরো করে প্রাণে মেরে ফেলবে এমনটাই হুমকি দিচ্ছেন। বিবাদী আনোয়ার হোসেন জাল কাগজপত্রের ভিত্তিতে বৃদ্ধার আরো সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দায়ের করিয়া বৃদ্ধ বয়সে হেনস্থা করছেন। তাই বর্তমান সময়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় ছাড়া বৃদ্ধার আর কোন উপায় নাই। তাই প্রশাসনের নিকট তিনি আবেদন রাখেন উনার সম্পত্তির যাতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বের করে উনার সম্পত্তি উনাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu