তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধিঃ তেলিয়ামুড়া মহকুমার অগ্নিনির্বাপক দপ্তর নিয়ে আমাদের আজ বিশেষ প্রতিবেদন আপনাদের সামনে। একনাগাড়ে ২৫ বছরের অধিক সময় ধরে ত্রিপুরায় শাসন করে ও তেলিয়ামুড়া মহকুমার প্রধান অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্রটির হাল ফেরাতে সক্ষম হয়নি তৎকালীন বাম সরকার। ২৫ বছরের বাম সরকারের পতন ঘটিয়ে রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার। এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রায় দু'বছর অতিক্রান্ত হতে চলল, এখন পর্যন্ত এই কেন্দ্রটির জন্য কোন স্থায়ী বাড়ি তৈরি করে দিতে পারেনি দপ্তর। প্রতিবছরই লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ব্যায় করে ভাড়া বাড়িতে চলছে এই দপ্তরটি।
যদিও সেই বাড়িটি অপরিকল্পিত। চতুর্থ বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে তেলিয়ামুড়া- কল্যাণপুর- মঙ্গিয়াকামি- তৈদু- অম্পি সহ বড়মুড়া- আঠারোমুড়া পাহাড়ের মানুষের কথা চিন্তা করে তাদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে তেলিয়ামুড়া তে এই কেন্দ্রটি খোলা হয়েছিল। যদিও, এরপর কল্যাণপুরে ও একটি অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র চালু হয়। জানা যায়, তেলিয়ামুড়া তে এই অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র চালু হওয়ার পূর্বে কোন অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনা ঘটলে আগরতলা অথবা খোয়াই থেকে অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের গাড়ি আনতে হতো। আর এত দূর থেকে গাড়ি আসতে আসতে সবকিছু শেষ হয়ে যেত। এমন ঘটনার বহু উদাহরণ সম্পর্কে তেলিয়ামুড়া বাসি অবগত রয়েছে।
তেলিয়ামুড়া বাসীর দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে এই কেন্দ্রটি খোলা হলেও এর উন্নয়নের জন্য কোন চিন্তা ভাবনাই করেনি তৎকালীন দপ্তর।তেলিয়ামুড়া অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র টি খোলার পর পঞ্চম বামফ্রন্ট সরকারের অগ্নি দপ্তরের মন্ত্রী গোপাল দাস তেলিয়ামুড়া তে এই কেন্দ্রটির স্থায়ী বাড়ি তৈরীর জন্য বহু চেষ্টা চালান। উনার তৎপরতায় সেই সময় ত্রিপুরা সড়ক পরিবহন নিগমের তেলিয়ামুড়া অফিসের অর্ধেক জায়গা অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের স্থায়ী বাড়ি নির্মাণের জন্য স্থির করা হয়। সেই সাথে নিগমের সাথে ও সরকারিভাবে চুক্তি পত্র ঠিক হয়। কিন্তু চুক্তি পত্র কাগজ-কলমে দ্বারা লিখিত হয়ে সরকারি লাল ফিতায় বন্দি হয়ে রয়ে গেল। সেই জায়গায় আরো ৫ বছর পর গড়ে উঠলো উত্তরণ সুপার মার্কেট। ষষ্ঠ বামফ্রন্ট সরকারের এই দপ্তরের মন্ত্রী জয় গোবিন্দ দেব রায় বহুবার তেলিয়ামুড়া আসেন এই বাড়ি নির্মাণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে।
কিন্তু কাজের কাজ অশ্ব ডিম্ব। যদিও তেলিয়ামুড়া পর চালু হওয়া কল্যাণপুর অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্রের স্থায়ী বাড়ি হলেও সাতটি বাম সরকার তেলিয়ামুড়া বাসীর স্বপ্নকে আদৌ সার্থক করতে পারল? তাছাড়া তেলিয়ামুড়া অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের ভেতরে গিয়ে প্রত্যক্ষ, তারা যেই ঘরটিতে বসবাস করছে সেই ঘরটি বসবাসের যোগ্য নয়। বৃষ্টি এলে ছাতা মাথায় রেখে ঘরের ভেতর বসে থাকতে হয়। তাছাড়া ঘরের ভেতর থেকে সরাসরি সূর্য দেবকে প্রত্যক্ষ করা যায়। তাছাড়া অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের অফিসে থাকা ৩৫-৪০ জন কর্মীদের প্রাকৃতিক কার্য্য করার জন্য ১ টি মাত্র শৌচালয় রয়েছে। তার অবস্থাও করুন। সব মিলিয়ে তেলিয়ামুড়া অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের কর্মচারীরা খুবই কষ্টের মধ্যে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে, এমনই চিত্র উঠে এলো আমাদের ক্যামেরার লেন্সে।
0 মন্তব্যসমূহ