ধর্মনগর প্রতিনিধিঃ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ছট পূজা উপলক্ষে উত্তর জেলার ধর্মনগর রেল স্টেশনের কলোনি এলাকায় জাঁকজমক উৎসবের পরিবেশ যদিও বহু বছর থেকেই ধর্মনগরের বিভিন্ন এলাকার হিন্দি ভাষা ভাষীর হিন্দুরা এই ছট পুজোর আয়োজন করে থাকেন। প্রতি বছর দীপাবলির কিছুদিন পরেই তিথি অনুযায়ী এই পুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে।এবারো ছট পূজা উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে ধর্মনগর রেলষ্টেশনের রেল কলোনির ১নং ফিসারীর চারধারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা সেখানে ভিড় জমিয়ে ছিল পুজো দেখতে।যদিও সূর্য্য উপাসনার এই অনুপম লৌকিক উৎসবটি বর্তমান সময়ে এতদাঞ্চলে ব্যাপক বিস্তার লাভ করলেও পূর্বে তা কিন্তু ভারতের বিহার ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ রাজস্থান ইত্যাদি রাজ্য সমুহে প্রসিদ্ধ ছিল।
বর্তমানে এ উৎসবটি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পালিত হয়। এ উপলক্ষে দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ মুখ্যমন্ত্রী বার্তায় সবাইকে ছট পূজার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।ছট পূজা মুলত সূর্য্য দেব ও উনার বোন ষষ্টিকে নিয়েই পালিত হয়। সঙ্গে উনার দুই পত্নী ঊষা ও প্রত্যষাকেও অর্ঘদান করা হয়। এ পূজা নিয়ে বিভিন্ন গ্রন্থে বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করা হলেও পূজাটির মুল উৎস হচ্ছেন সুর্য্যদেব। ভারতের অন্যান্য স্থানে এটি চৈত্র ও কার্তিক মাসের ষষ্ঠী তিথীতে বছরে দুবার পালন হলেও আমাদের এলাকার কালীপূজার পক্ষকাল পরই বছরে একবার ছটপূজা অনুষ্টিত হয়ে আসছে।
পারিবারিক সুখ সমৃদ্ধি তথা মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য এটি পালন করা হয়।যদিও ছট পূজায় কোনো মূর্তি উপাসনা করা হয় না।শুধু মাত্র ডুবন্ত ও উদিত সূর্যকে সামনে রেখে পূজা করা হয়।কিন্তু কোথাও কোথাও ঘাটের সন্নিকটে সূর্য দেব ষষ্ঠী সহ ঊষা ও প্রত্যুষার প্রতিমূর্তিও প্রতিষ্ঠা করতে দেখা যায়।এই পূজা পালনে আবার কঠিন নিয়মও রয়েছে।ভক্তদের দুদিন আগে পানিলাউর সবজি সহ ঘিয়ে ভাজা লুচি খেয়ে দুদিন উপোস থাকার পর ষষ্ঠীর পূজা শেষে পাকান্ন গ্রহনের নিয়ম রয়েছে।পূজায় কুলো ও ডালাতে নৈবিধ্য সাজিয়ে ফলমুল ইত্যাদি দেবীর নামে উৎসর্গিত করা হয়।
এই পূজায় পরম্পরাগত 'ঠেকুয়া' প্রস্তুত করে নৈবেদ্য প্রদানের নিয়ম রয়েছে।আজ সূর্যাস্তের আগে ধর্মনগর রেল স্টেশন এলাকার ফিসারীর প্রতিটি ঘাটকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে তুলা হয় এবং ভক্তরা জলে দাড়িয়ে সুর্য্যদেবকে প্রণাম করেন।আগামিকাল প্রত্যুষে ফের অনুরুপ ভাবে পূজা নিবেদনের পর ছটপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।পুজোতে যাহাতে কোথাও কোন অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে তৎপর থাকতে দেখা গেছে।সাথে পুজোর আয়োজনকে কেন্দ্র করে উদ্যোক্তা ও ভক্তদের মধ্যে চরম আনন্দ লক্ষ্য করা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ