সবুজ ত্রিপুরা
২২ জুন, ২০২০
সোমবার
ধর্মনগর প্রতিনিধিঃ করোনা মহামারীর ফলে গোটা দেশে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন বহু যুবক যুবতী। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। এরইমধ্যে ত্রিপুরার বেকারদের স্বনির্ভর করে তোলার উদ্দেশ্যে একটি স্বস্তির খবর উঠে এলো আমাদের ক্যামেরায়।বর্তমানে পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র চলছে উন্নত প্রজাতির পোল্ট্রি বিট কড়কনাথ মুরগি পালন।
পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রর ভেটেনারি সাইন্স সাবজেক্ট ম্যাটার স্পেশালিস্ট ডঃ সৌমেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন। কড়কনাথ মুরগির মাংসে কলেস্টেরল ও ফেটের পরিমাণ নেই বললেই চলে। অথচ প্রটিন রয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে উচ্চ রক্ত চাপ সম্পন্ন রোগি কিংবা হার্টের সমস্যা জনিত রোগিরা অনায়াসেই এই মাংস খেতে পারেন।
বর্তমানে দেশের বড়বড় শহরে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের ডিসে এই কড়কনাথ মুরগির মাংস দেওয়া হয়ে থাকে।এই পোল্ট্রি বিটের নাম কড়কনাথ হলো কি করে ? একথা জানতে চাইলে উনি জানান। এটি প্রথমে মধ্য প্রদেশের ছাওয়া জেলার আদিবাসীরা পালন শুরু করে।
মূলত কড়কনাথ মুরগির প্রজাতিটি কালো রং এর হয়। পাখনা কালো, মাথার ঝুঁটি কালো,পা কালো,এমনকি এই প্রজাতির মুরগের ডিমও কালচে রং এর হয়। ফলে প্রথমে ঐ অঞ্চলের আদিবাসীরা এদের কালো মাসি অর্থাৎ তাদের ভাষায় কালো পাখি বলতো। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিশ্লেষনের মাধ্যমে একে কড়কনাথ নাম দেওয়া হয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সিএআরআই ইজ্জত নগর বেরেলী থেকে এই প্রজাতির মুরগি পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে আনা হয়।খুব তাড়াতাড়ি এই মুরগি এখানে বেড়ে উঠে। বর্তমানে ডিম দেওয়াও শুরু করেছে।
দেশি মুরগি প্রতি সিজনে ৫০-৬০ টি ডিম দিয়ে থাকে কিন্তু কড়কানাথ সিজনে ১০০-১১০ টি ডিম দেয়। ফলে রাজ্যের বেকারদের স্ব-নির্ভর করে তোলার জন্য এবার এই ডিম থেকেই বাচ্চা তৈরি করে বিভিন্ন গ্রামে প্রকল্পের মাধ্যমে বেনিফিসিয়ারিদের দেওয়ার পথেই হাঁটছে পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। বর্তমান বাজারে এই পোল্ট্রি বিটের খুব চাহিদা রয়েছেন। কেননা এই মুরগির মাংসে কলেস্টেরল ও ফেট না থাকায় যাদের মাংস ভক্ষণে নিষেধ রয়েছে তারাও অনায়াসে এই মাংস খেতে পারেন ।
জানা গেছে যেখান থেকে এই কড়কনাথ মুরগি পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে আনা হয়েছিল সেখানে এই মুরগির মাংসের দাম ছিলো প্রতি কিলো ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। প্রতি ডিমের দাম ছিল প্রায় ৩০ টাকা।পাশাপাশি দেশি মুরগির মত খুব সু-স্বাদ হয় করকনাথ মুরগির মাংস । ফলে রাজ্যের বেকাররা এই মুরগি পালন করে খুব সহজেই স্ব-নির্ভর হয়ে উঠতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যেই পানিসাগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে চলছে এই উন্নত প্রজাতির পোল্ট্রি বিট কড়কনাথ মুড়গির পালন।
0 মন্তব্যসমূহ