আজ রাত বা‌রোটা থে‌কে ত্রিপুরার কোন লোককে অস‌মে প্র‌বেশ কর‌তে দেওয়া হ‌বে না


সবুজ ত্রিপুরা, চুড়াইবাড়ি প্রতিনিধি, মে : ক‌রোনার প্রভাব রুখ‌তে অবশেষে অসম ত্রিপুরা রাজ্য সীমান্ত সিল কর‌লেন করিমগঞ্জ জেলার ডি‌সি। তৃতীয় পর্যায়ে শুরু হওয়া লকডাউ‌নে কিছুটা ছাড় দি‌তেই হু হু ক‌রে বেঁ‌ড়েই চ‌লছে মহামা‌রি ক‌রোনার প্র‌কোপ। এমনকি কয়েক দি‌নে ত্রিপুরাতে ব্যাপক প‌রিমান ক‌রোনা সংক্রম‌ণের খবর বেরিয়ে এসেছে। এ অবস্থায় বিব্রত হ‌য়ে উঠে‌ছে জেলা প্রশাসন।‌ বি‌শেষ ক‌রে গত কয়‌দিন ধ‌রে উত্তরের চুরাইবা‌ড়ি সংলগ্ন ত্রিপুরা অসম আন্ত:রাজ্য সীমান্ত গেইট দি‌য়ে উভয় রা‌জ্যের আটকা পড়া কিছু জনগন‌কে নিজ নিজ রা‌জ্যে ফি‌রি‌য়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করার পর থে‌কে ক‌রোনা সংক্রামণ বেঁ‌ড়েই চ‌লছে। 
রাজ্য থে‌কে ফিরে যাওয়া ক‌রিমগঞ্জ জেলার কায়স্থগ্রা‌মের ল‌রি চালক জফরুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত ক‌রোনা প‌জে‌টিভ ধরা পড়ায় ক‌ঠোর পদ‌ক্ষেপ নি‌তে বাধ্য হল করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এ ম‌র্মে আজ করিমগঞ্জ জেলার ডি‌সি, এস‌পি, ডিআই‌জি, ডিএস‌পি সহ স্থানীয় বিধায়ক যথাক্র‌মে আনবামুথান এম‌পি কুমার এসকৃষ্ণা, দি‌লীপ দে, শুধন্য শুক্ল‌বৈদ্য ও কু‌ষ্ণেন্দু পাল অসমের চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোস্ট ও রাজ্যের প্রবেশদ্বার চুড়াইবাড়ি থানায় সীমান্ত গেই‌টে উপ‌স্থিত হ‌য়ে প্রথ‌মে অসম পু‌লি‌শের সা‌থে জরু‌রি আলোচনা ক‌রে প‌রে উনারা ত্রিপুরার থানায় উপ‌স্থিত হ‌য়ে ত্রিপুরা প্রশাস‌নের সা‌থে কথা ব‌লেন। উক্ত আলোচনায় ডি‌সি আনবামুথান এম‌পি ত্রিপুরা প্রশাসন‌কে জানান যে ক‌রোনা ভাইরাস‌কে প্র‌তিহত কর‌তে সরকা‌রি নি‌র্দেশ মুতা‌বেক আজ রাত বা‌রোটা থে‌কে ত্রিপুরার কোন লোক অস‌মে প্র‌বেশ কর‌তে দেওয়া হ‌বে না। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্য্যন্ত এ নি‌র্দেশ বজায় থাক‌বে। ত‌বে দু‌টি রা‌জ্যে পূ‌র্বের ন্যায় পণ্যবা‌হি ল‌রি সহ জরু‌রি সেবার সা‌থে যুক্ত যান বাহন সহ অনু‌মো‌দিত ব্য‌ক্তি বা কর্মচারীরা চলাচল কর‌তে পার‌বেন।

পাশাপাশি রাজ্যের প্রবেশদ্বার চুড়াইবাড়ি গেইটে এক লরি চালকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর গতকাল করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সেই চালক রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে অসমের কায়স্থগ্রামে নিজ বাড়িতে চলে যায়। যদিও আজ অসম প্রশাসন ঐ লরি চালককে করিমগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের উত্তর জেলার জেলা প্রশাসন এই মহামারী করোনা ভাইরাস নিয়ে কতটুকু তৎপর বা সক্রিয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যে লরিচালকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলো, আর রিপোর্ট আসার পূর্বেই সেই লরি চালক কিভাবে উত্তর জেলার জেলা প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে অসমে চলে গেলো তা নিয়ে দেখা দিয়েছে হাজারো প্রশ্ন। ঐ লরি চালক কাদের সাথে মিশেছেন ও কাদের সংস্পর্শে এসেছেন তা সনাক্ত করতেও নাকানি-চুবানি খাচ্ছে উত্তর জেলার জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি চুড়াইবাড়িতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদের রুটিন মাফিক ডিউটি না করারও অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, রাজ্যে প্রবেশ করা লরি চালক সহ চালক ও যাত্রীদের কোয়ারেন্টিন করার পর সেই জায়গাতে কতটুকু নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে তাও চিন্তার বিষয়। সেখান থেকে যদি কেউ পালিয়ে যায়, তা যে উত্তর জেলার জেলা প্রশাসন জানতে পারবে না তা অবাস্তবের কিছু নয়। সুতরাং রাজ্যের প্রবেশদ্বার চুড়াইবাড়ির দিকে সূক্ষ্ম নজর রাখুক রাজ্য সরকার নতুবা আগামী দিনে ভয়াবহ রূপ নেবে পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরা।

ছবিঃকিশোর রঞ্জন হোড়

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu