টিআইডিসির চেয়ারম্যান টিংকু রায়ের বিধানসভা ক্ষেত্র পাচারকারীর স্বর্গরাজ্য, অভিযোগের তীর থানার বড়বাবু কৃষ্ণধন সরকারের বিরুদ্ধে




সবুজ ত্রিপুরা, নিজস্ব প্রতিনিধি, ৩০ এপ্রিল : রাজ্যের প্রবেশ দ্বার তথা আসাম-ত্রিপুরা সীমান্ত লাগোয়া এক গুরুত্ব পূর্ণ অঞ্চল কদমতলা। এছাড়া কদমতলার বেশ কিছু সীমানা বাংলাদেশের সাথে ঘেরা। এটি রাজ্য রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব তথা টিআইডিসির চেয়ারম্যান টিংকু রায়ের বিধানসভা ক্ষেত্র। কদমতলায় এক বড় অংশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস।


দেশে লগডাউনের সময় তারকপুর-রাজনগর এলাকা স্পর্শকাতর এলাকা দেখে পুলিশ স্থানীয় মানুষের সাহায্য নেয় নজরদারি জোরদার করার জন্য এবং তাতে বড় সাফল্যও পায় প্রশাসন। এক সূত্রের খবরে জানা যায় এই যৌথ নজরদারির খুব একটা পক্ষে ছিলেন না থানার বড়বাবু তথা কৃষ্ণধন সরকার, যিনি কয়েক মাস আগেই কদমতলা থানায় এসে দায়িত্ব নেন।

তারকপুর-রাজনগর এলাকার মানুষের অভিযোগ মূলে জানা যায়, কয়েক মাস ধরে অর্থাৎ থানার বড়বাবু হিসেবে কৃষ্ণধন সরকার দায়িত্ব নেওার পর থেকেই কদমতলা তারকপুর রাস্তা দিয়ে নানান অবৈধ সামগ্রী পাচারের এক মাত্রাতিরিক্ত রূপ ধারন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে নেশা সামগ্রী, দামী কাঠ ইতাদি। এমনকি পাচার তালিকায় রয়েছে গবাদি পশুও। স্থানীয় নাগরিকের কাছ থেকে জানা যায়, লগডাউন চলাকালিন সময়কে কাজে লাগিয়ে পাচার চক্রের সাথে যারা যুক্ত, তারা এই ব্যবসাকে অন্য মাত্রা দিতে উঠে পরে লাগে। কথাও আবার পাচারকারীরা সফল হচ্ছে।

লগডাউনের সময় যৌথ নজরদারির ফলে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বেশ কয়েকবার বহিরাজ্য থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং পাচার রুখতে সক্ষম হয়। এমন কি কিছু পাচারকারিদের হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হয়ে ছিল স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। যদিও কদমতলা থানার বড়বাবু কৃষ্ণধন সরকারের নির্দেশে পুলিশ কোন এক অজ্ঞাত কারণে তাদের হেপাজতে না নিয়ে ছেড়ে দেয়। তাতেই এলাকাবাসীর মনে সন্ধেহ হয় এবং ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

যে সকল স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা ঐ দিন পাচারকারিদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ছিল তাদের কে পরবর্তী সময়ে নানা ভাবে হয়রানি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে থানায় তুলে নিয়ে যান থানার বড় বাবু কৃষ্ণধন সরকার। আর তাতেই ক্ষেপে বসে এলাকার জনগণ।

গত ২৭ এপ্রিল তারকপুর-রাজনগর এলাকাবাসী উত্তর ত্রিপুরা পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তীর কাছে এক লিখিত অভিযোগ আনেন কদমতলা থানার বড়বাবু কৃষ্ণধন সরকারের বিরুদ্ধে এবং উনার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাখেন। যার এক প্রতিলিপি উত্তর ত্রিপুরা জেলাশাসকের কাছে তুলে দেয় এলাকাবাসী

গত ২৮ এপ্রিল তারকপুর-রাজনগরের এলাকাবাসী আরও একটি পত্র মারফৎ কদমতলা থানার বড়বাবু কৃষ্ণধন সরকারকে জানিয়ে দেন যে, উনারা স্বেচ্ছাসেবক হিসবে দায়িত্ব পালনে অক্ষম। ফলে তারকপুর-রাজনগর সীমান্ত এলাকায় যৌথ নজরদারির বন্ধ হয়ে যায়। আর তাতেই পাচার চক্রের সাথে যারা যুক্ত তাদের পাচার ব্যবসা পুনরায় স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়।


আরও পড়ুন: ধারালো অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকে বাধায় দুষ্কৃতিকারীরা প্অলাতক অস্ত্র উদ্ধার


এখানে উল্লেখ্য যে, কদমতলা হল ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা টিআইডিসি এর চেয়ারম্যান টিংকু রায়ের বিধানসভা ক্ষেত্র। সুত্র মারফৎ জানা যায়, এখনই যদি তদন্ত করে আইন অনুসারে পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তা হলে এলাকাবাসী লকডাউনের শেষ হবার পর বৃহত্তর আন্দলনে নামবে। কদমতলা  সীমান্ত দিয়ে পাচার ব্যবসা এখনি বন্ধ না করলে নেশা সামগ্রী সারা রাজ্যের ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের যুবসমাজকে এক অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেবে বলে আশাঙ্কা করা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu