নদী থেকে অবৈধভাবে বালি আহরণ, সঙ্কটে তীরবর্তী এলাকাবাসী

সবুজ ত্রিপুরা, পানিসাগর প্রতিনিধি, ০৫ নভেম্বর : উত্তর জেলার পানিসাগর মহকুমার অন্তর্গত জলাবাসা বাজার সংলগ্ন দশমীঘাট এলাকায় জুরি নদী থেকে আজ বেলা ২.০০টা নাগাদ অবৈধ ভাবে বালি তোলার একটি মেশিন আটক করল পানিসাগর মহকুমা প্রশাসন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন মহকুমা প্রশাসনের পক্ষে ডিসিএম শ্রী ভান লাল ডিকা ডার্লং, পানিসাগর বন পরিসর কর্মকর্তা শ্রী আর এম ডার্লং, পানিসাগর থানার এস আই শ্রী রঞ্জিত চৌধুরী এবং জলাবাসার তহশিলদার শ্রী অমর মলসুম মহাশয় সহ অন্যান্য আধিকারিকবৃন্দ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে যে, পানিসাগর থানার অন্তর্গত পেকুছড়া ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিন, পিতা - রফিক উদ্দিন, দীর্ঘ দিন ধরে বন দপ্তরের চোখে ধূলো দিয়ে ঐ এলাকা থেকে মেশিনের সাহায্যে অবৈধ ভাবে বালি তোলে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে। অপর দিকে শক্তিশালী মেশিনের সাহায্যে বালি তোলার মাধ্যমে পাশ্ববর্তী জনৈক বিশ্বজিৎ নাথ-এর জোতজমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ প্রায় বছর খানেক ধরে প্রথমে ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার, পরবর্তীতে মহকুমা প্রশাসনের দারস্থ হয়েও বিশ্বজিৎ নাথ কোনও সুফল না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের শরণাপন্ন হন। তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পেয়ে সংবাদকর্মীরা অকুস্থলে পৌঁছায় এবং তদন্তক্রমে ইসলাম বাবুর সাথে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজিৎ বাবুর সাথে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু ইসলাম উদ্দিন জানায় বৈধ কাগজ পত্র দিয়ে নিজের জোতজমি থেকে বালি তুলছেন। এতে সংবাদকর্মীরা ওনার কাগজ পত্র দেখাতে বললে কিছু কাগজপত্র  দেখালেও কোনও লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।
জলাবাসায় জুরি নদী থেকে আটক অবৈধ ভাবে বালি তোলার একটি মেশিন আটক। ছবি : রমাকান্ত দেবনাথ।
এদিকে সংবাদমাধ্যমকে দেখে তড়িঘড়ি ইসলাম উদ্দিন মেশিন বন্ধ করে দেয় এবং লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত আর বালি তুলবেন না বলে স্বীকার করে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকর্মীরা চলে যাওয়ার পর পুনরায় মেশিন চালু করে দেয়। এমনকি সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে কটাক্ষ করে কুৎসা রটাতে থাকে।
বাজেয়াপ্ত বালি তোলার একটি মেশিন ও পাম্প। ছবি : রমাকান্ত দেবনাথ।
পরবর্তীতে সংবাদমাধ্যমের চাপে পরে মহকুমা প্রশাসনের নিদ্রা ভঙ্গ হয়। এই ব্যাপারে বিগত দূর্গাপূজোর প্রাক্কালে জলাবাসার ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মহকুমা শাসকের নিকট একটি প্রতিলিপি প্রদান করা হয়। তাতে উল্লেখ করেন যে, ইসলাম উদ্দিনের বালি তোলার দরুন জলাবাসার একমাত্র দশমী ঘাটটি নদীগর্ভে লীন হয়ে যাবার উপক্রম। তাই মহকুমাশাসকের কাছে ঘাটটিকে বাঁচানোর আর্জি জানানো হয়। কিছুটা দেরিতে হলেও আজকের বনদপ্তরের কাজের ফলে এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। ঐ এলাকায় আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধেও একই ভাবে অভিযোগ রয়েছে, এদের বিরুদ্ধেও আগামী দিনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন যানানো হয় মহকুমা প্রশাসনের কাছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu