উত্তর ত্রিপুরা জেলায় পানিসাগরে আঞ্চলিক শারীর শিক্ষন মহাবিদ্যালয়ে নবনির্মিত সুইমিং পুলের উদ্বোধনে- মুখ্যমন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রী-Sabuj Tripura

 

 সবুজ ত্রিপুরা

১৬ ডিসেম্বর

শুক্রবার

পানিসাগর প্রতিনিধিঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে খেলাধুলার মানোন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর যে ড্রিম প্রজেক্ট খেলো ইন্ডিয়া সেই অনুযায়ী ত্রিপুরা রাজ্যে খেলো ত্রিপুরা চালু করা হয়েছে। খেলাধুলার মান উন্নয়নের মধ্য দিয়ে রাজ্যের যুব সমাজের বিকাশে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

যুব সমাজের উন্নতি হলে দেশ ও রাজ্যের উন্নতি সম্ভব। সেই দিশাতেই রাজ্য সরকার কাজ করছে। আজ পানিসাগরে আঞ্চলিক শারীর শিক্ষন মহাবিদ্যালয়ে নবনির্মিত সুইমিং পুল ও ১০০ শতাংশ শয্যাবিশিষ্ট পুরুষ হোস্টেলের উদ্বোধন, সিন্থেটিক অ্যাংলেটিক্স ট্র্যাকের শিলান্যাস এবং জেলাভিত্তিক ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। নবনির্মিত সুইমিং পুলটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এবং ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পুরুষ হোস্টেলটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। পানিসাগর পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে রাজ্যকে নেশামুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার বিগত দিনে প্রচুর পরিমাণে নেশা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছে। রাজ্যের বাইরে থেকে যে নেশাসামগ্রী আসাম ও মিজোরাম হয়ে ত্রিপুরাতে প্রবেশ করছে তাতে ত্রিপুরা রাজ্যের যুব সমাজ এই নেশাতে আক্রান্ত হচ্ছে। এইক্ষেত্রে রাজ্য সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে এগিয়ে 

                         হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

যাচ্ছে এবং নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার প্রয়াস করছে। আইন শৃঙ্খলার ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা অনেক উন্নতি লাভ করেছে। দেশে ২৮টি রাজ্যের মধ্যে আইন শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা ৫ম স্থানে রয়েছে। রাজ্য সরকার স্বচ্ছ নীতি কাজ করছে। টেট উত্তীর্ণ ছেলেমেয়েদের স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া এক হাজার কনস্টেবল নিয়োগ ও স্বচ্ছতার সাথে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে ভাতা প্রাপকদের বিভিন্ন ভাতা প্রকল্পে স্বচ্ছতার সাথে দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানে রাজ্যের প্রান্তিক এলাকা পর্যন্ত মানুষের কাছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবাগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই অভিযান চলবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মহিলাদের স্বশক্তিকরণের জন্য রাজ্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বসহায়ক দলের সংখ্যা আগে যেখানে ৪ হাজার ছিল বর্তমানে তা প্রায় ৯ গুণ বাড়ানো হয়েছে। মহিলাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে মহিলাদের লোনের পরিমাণ প্রায় ১১ গুণ বাড়ানো হয়েছে। সরকারি কলেজগুলিতে ছাত্রীদের অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৭ নভেম্বর থেকে রাজ্যে আমার সরকার নামে একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে যার মাধ্যমে রাজ্যের মানুষ বিভিন্ন সমস্যাগুলি সরাসরি জানাতে পারবেন এবং তার মাধ্যমে অতি দ্রুততার সাথে মানুষের বিভিন্ন সমস্যাগুলি নিরসনের ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্যের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে ৯টি সুপার স্পেশালিটি আগরতলা মেডিকেল কলেজে শুরু হতে যাচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন পিএইচসিগুলিতে ওয়েলনেস সেন্টার গঠন করা হয়েছে। রাজ্যের মেডিকেল কলেজে আগে যেখানে ১০০টি সিট ছিল এখন তা বাড়িয়ে ১২৫ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, আঞ্চলিক শারীর শিক্ষন মহাবিদ্যালয়ের সুইমিং পুল, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হোস্টেল ছাত্রছাত্রীর জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। যারা সুইমিংয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাদের জন্য রাজ্য সরকার এই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। রাজ্য সরকার সারা রাজ্যে ৪টি অ্যাস্টোটার্ফ তৈরি করার জন্য ক্রীড়া দপ্তরকে ২০ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য খেলো ত্রিপুরা সুস্থ ত্রিপুরার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধেও রাজ্য সরকার এগিয়ে যেতে পারবে। তিনি এলাকার সমস্ত অংশের যুবকদের নেশাকে বর্জন করে খেলাধুলাকে গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি জানান, করোনাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিনামূল্যে টিকা প্রদানের মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচানো হয়েছে। তাছাড়া করোনা মহামারির সময়ে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, জল জীবন মিশনের মাধ্যমে রাজ্যের ৭ লক্ষ ৪২ হাজার বাড়িতে জলের ব্যবস্থা করা হবে। যার মধ্যে ৪ লক্ষ ১০ হাজার বাড়িতে এখন পর্যন্ত জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. চিত্রজিৎ ভৌমিক। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন 


বিধায়ক বিনয়ভূষণ দাস, বিধায়ক মলিনা দেবনাথ, জেলাশাসক ও সমাহর্তা নাগেশ কুমার বি, জেলা পুলিশ সুপার ড. কিরণ কুমার কে প্রমুখ।উল্লেখ্য, পানিসাগর সফরে এসে আজ দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র উত্তর ত্রিপুরার নবনির্মিত ভবনের দ্বারোদঘাটন করেন এবং নবনির্মিত কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কার্যালয় প্রাঙ্গণে কৃষকদের সাথে মতবিনিময়ে অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রী কৃষকরা কৃষি দপ্তরের যে বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবাগুলি যথাযথভাবে পাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কৃষকদের উন্নতির জন্য 

বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করছে রাজ্য সরকার। তিনি কৃষকদের অধিক ফসল উৎপাদন করার লক্ষ্যে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান ও তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধায়ক বিনয়ভূষণ দাস, বিধায়ক মলিনা দেবনাথ প্রমুখ। পানিসাগরে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Close Menu