সবুজ ত্রিপুরা,
চুরাইবাড়ি প্রতিনিধি ,
কিশোর রঞ্জন হোড়
, ১লা এপ্রিল : ত্রিপুরা রাজ্যের প্রবেশদ্বারে ৪০০ বছরের পুরোনো সিন্দুক উদ্ধার করা হয় । যে সিন্দুকে প্রজারা সেই সময়ে খাজনা প্রদান করতেন। উত্তর জেলার কদমতলা ব্লকাধীন কুর্তি অঞ্চল হচ্ছে প্রাচীনতম জনবসতি অঞ্চল। কুর্তি হাওরের নাম প্রসিদ্ধি। একসময়ে নৌ পথে বর্তমান বাংলাদেশের সাথে সরাসরি বাণিজ্য হত, সেটা আজ ইতিহাস। সেই রাজন্য আমল থেকে কুর্তি তে রয়েছে তহশিল কাছারি। মানিক্য রাজা কিংবা মানিক্য উপাধি লাভের আগের এই সিন্দুক ত্রিপুরার ঐতিহ্য বহন করে। কুর্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশেই এটি মাটির নিচে ছিল।
কদমতলা হাসপাতালের ইনচার্জ ডঃ অরুণাভ চক্রবর্তী, করোণা ভাইরাসের সচেতনতা এক শিবিরে কুর্তিতে উপস্থিত হন । সেখানেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা ক্রমে উঠে আসে কুর্তি গ্রামের ইতিহাস। তখনই সেই সিন্দুকের কথা উঠে। যেহেতু কুর্তি ত্রিপুরার শেষ প্রান্ত সেখানে রয়েছে টিএসআর ক্যাম্প।
টিএসআর জওয়ানরা এই কথা শোনার পর সিন্দুকের খোঁজ শুরু করে। যেহেতু সিন্দুকের অর্ধেক মাটির নিচে ছিল তাই খুজতে অসুবিধা হয়নি। এটি মাটি থেকে তুলে বর্তমানে ক্যাম্পের পাশে রাখা হয়েছে।টিএসআর জওয়ানদের মুখিয়া জানালেন, এটা ত্রিপুরার জন্য গৌরবের বিষয়। রাজন্য আমলের স্মৃতি। সেটাকে তারা সংরক্ষণ করে রাখবেন। অপরদিকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আব্দুল খালেক বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন।
যে ডাক্তার সাহেবের কারণে এই সিন্দুক উদ্ধার হল সেই ডঃ অরুণাভ চক্রবর্তী জানান, কুর্তির সুপ্রাচীন একটা ঐতিহ্য রয়েছে। ছোটবেলায় তিনি বাবা মা এর মুখে কুর্তির কথা শুনে ছিলেন। এখানে রাজার সিন্দুকের কথা ও তিনি জেনেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কর্মসূত্রে কদমতলা আসেন।
আজ করোনা ভাইরাসের সচেতনতা শিবির শেষে হঠাৎ তার মনে পড়েই কথাটি। রোশন চাকলাদারের অঞ্চলে তৎকালীন সময়ে আসামের কিছু অংশ পড়েছিল এবং সেই সময় এই সিন্দুকে রাজস্ব রাখা হতো। এই সিন্ধুক রাজন্য আমলের স্মৃতিবিজড়িত বলে দাবি করেন ডঃ অরুণাভ চক্রবর্তী। অপরদিকে কুর্তি গ্রাম পঞ্চায়েত কত খানি সংরক্ষণ করে রাখবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে এই সিন্দুকটি মিউজিয়ামে নিয়ে কুর্তির প্রাচীনতম জনবসতির ইতিহাসকে তুলে ধরলে হয়তো আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে, শিখতে পারবে এই ইতিহাস । এই সিন্দুক ত্রিপুরার রাজন্য আমলের স্মৃতি বহন করে।
0 মন্তব্যসমূহ